প্রতীকী ছবি।
কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজ্যের দুই বিরোধী শক্তির মিছিল এবং সমাবেশের জেরে নাকাল হলেন শহরবাসী।
শুক্রবার যে যানজট হতে পারে, সে আশঙ্কা ছিলই লালবাজারের। বাস্তবে ঘটলও তা-ই। এ দিন দুপুরের পর থেকেই মধ্য এবং উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ির গতি প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায় বিরোধীদের একাধিক মিছিলের জন্য। লালবাজারের দাবি, মিছিল ও সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে পুলিশের তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছে। ফলে বিকেলে অফিস-ফেরত যাত্রীদের তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি।
লালবাজার জানিয়েছে, দিনটা শুরু হয়েছিল বামেদের গণ সংগঠনের মিছিল দিয়ে। গত ২২ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন দাবিতে বাম গণ সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ বিপিএমও জেলায় জেলায় জাঠা করছে। তারই অঙ্গ হিসেবেই এ দিন ছিল মহামিছিল। এর আগে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে তাদের জমায়েত ছিল। সেই মতো বেলা ১১টার পর শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মৌলালি, এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলায় পৌঁছয় একটি মিছিল। দ্বিতীয় মিছিলটি আসে হাওড়া স্টেশন থেকে। মহামিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ব্রেবোর্ন রোড-গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ ও বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট হয়ে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছন। কিছু ক্ষণ পরেই ওই রাস্তা দিয়ে আরও একটি মিছিল পৌঁছয় ধর্মতলায়। যার জন্য বন্ধ হয়ে যায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ। পরপর তিনটি মিছিলের জন্য অনেকটা সময় জুড়ে শিয়ালদহ, ধর্মতলা এবং ডালহৌসি চত্বরে যানজট হয়।
দুপুর একটার পরে বামেদের গণ সংগঠনগুলির মহামিছিল ধর্মতলা থেকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে মহাজাতি সদনের উদ্দেশে রওনা দিতেই চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গাঁধী রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোডে তীব্র যানজট হয়। বন্ধ হয়ে যায় ডোরিনা ক্রসিং ও পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলের যান চলাচল। শ্যামবাজার এবং হেদুয়ার কাছ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ এবং বিবেকানন্দ রোডও। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ বন্ধ থাকায় মেয়ো রোড, ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, গিরিশ পার্ক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু তাতেও অবস্থা সামাল দেওয়া যায়নি।
এক পুলিশকর্তা জানান, বামেদের ওই মহামিছিলে জমায়েত হয়েছিল প্রচুর। মিছিলের মাথা যখন মহম্মদ আলি পার্কের কাছে, শেষ ভাগ তখন ধর্মতলার সামনে। পরে মহাজাতি সদনের কাছে ওই মিছিল পৌঁছে সমাবেশ শুরু করার পরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ এবং মহাত্মা গাঁধী রোডের এক দিক দিয়ে গাড়ি চালানো হয়। গাড়ি চলাচল শুরু করে মধ্য কলকাতার বাকি রাস্তাতেও।
লালবাজারের দাবি, ওই স্বাভাবিক যান চলাচলের চিত্র ফিরে আসার মুখেই বাধা পায় বিরোধী কংগ্রেসের একটি মিছিলে। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সরকার উদাসীন— এই অভিযোগে এ দিন বিকেল তিনটের পরে প্রদেশ কংগ্রেস অফিস থেকে মৌলালি হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত যায় তাদের মিছিল। ফলে ওই সময়ে বন্ধ হয়ে যায় মৌলালি দিয়ে গাড়ি চলাচল। যানবাহনের গতি বাধা পায় এ জে সি বসু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোডেও। শিয়ালদহে ওই মিছিলের জেরে বেশ কিছু রাস্তায় যানজট হয়।
কলকাতা পুলিশের দাবি, ট্র্যাফিক কর্তাদের তৎপরতায় বিকেলের মধ্যে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছিল। পরে কংগ্রেসের মিছিল শেষ হতে বিকেলের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায় ধর্মতলা চত্বরও।