প্রতীকী ছবি।
জমি বিক্রি করলে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যেত। কিন্তু বাচ্চাদের খেলার মাঠ নেই। তাই বিক্রি নয়, বরং খেলার মাঠের জন্য জমি রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হাউজ়িং সোসাইটির সদস্যেরা। সেই মতো সংশ্লিষ্ট জমি কলকাতা পুরসভাকে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, বাঘা যতীন পার্ক হাউজ়িং সোসাইটি এবং পুরসভার মধ্যে দ্রুত সেই সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ফাইলের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, দু’বছর আগেই সোসাইটির ভিতরের সংশ্লিষ্ট জমিতে ছোটদের পার্ক তৈরির আবেদন করা হয়েছিল। এর পরে পুরসভা জমি সংক্রান্ত মালিকানা খতিয়ে দেখে। পুরসভার চিফ ভ্যালুয়ার এবং সার্ভেয়ার দফতরের তরফে ওই জমির সমীক্ষা করা হয়েছে। জমির মালিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরেই দু’পক্ষের বৈঠক হয়। এ বার চুক্তি স্বাক্ষর হলেই খেলার মাঠের কাজ শুরু হবে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পুরসভার মাসিক অধিবেশনে বিষয়টি ইতিমধ্যেই পাশ হয়ে গিয়েছে। চুক্তি সই হয়ে গেলেই মাঠের কাজ শুরু করব।’’
সোসাইটির সদস্যেরা জানাচ্ছেন, আশির দশকে ওই হাউজ়িং সোসাইটির যাত্রা শুরু। বর্তমানে সেখানে ১০৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ভিতরে কিছু খালি জমিও পড়ে রয়েছে। এক সদস্যের কথায়, ‘‘এর আগে ফাঁকা জমি দখলের চেষ্টা করা হয়েছিল। তার পরেই সদস্যেরা সিদ্ধান্ত নিই, যে কোনও পরিকল্পনামূলক কাজ করতে হবে।’’ সোসাইটির সম্পাদক অশোক পাইন বলেন, ‘‘ওই জমি বিক্রি করলে সোসাইটি লাভবান হত। কিন্তু লাভ করাটাই তো বড় নয়। সোসাইটির ছোটদের কোনও খেলার জায়গা
নেই। ওদের কথা ভেবে দু’কাঠার মতো জমি পুরসভাকে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
পুর কর্তারাও স্বীকার করেছেন, শহরে খেলার মাঠ ক্রমেই কমছে। পুরসভা মাঠ তৈরি বা সংস্কার করছে বটে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। মনোবিদদের মতে, পাড়া থেকে খেলার মাঠ হারিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু হাউজ়িং কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে খেলার মাঠ থাকাটাও আশার কথা। মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘হাউজ়িং কমপ্লেক্সগুলিতে ছোটদের খেলার জন্য জায়গা রাখা হয়। সেটা এক দিক থেকে ভাল।’’ পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘মাঠের ঘাটতি মানে খোলা সবুজ পরিবেশও কমে যাচ্ছে। এর ফলে নগর পরিকল্পনায় খামতির জায়গাটাই ধরা পড়ছে।’’