বিকল্প: ফ্লেক্সের বরাত কম, ভোট বাজারেও তাই ভরসা অন্য কাজ। সূর্য সেন স্ট্রিটের এক ছাপাখানায়। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার অব্যবহিত পরেই ভিড় উপচে পড়েছিল হোর্ডিং-ফ্লেক্সের বরাত দিতে।
কারণ, আমজনতার কাছে পৌঁছতে সব রাজনৈতিক দলের প্রচারেই একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে ব্যানার, হোর্ডিং বা ফ্লেক্স। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই সেই বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে যেন কিছুটা ভাটার টান। সৌজন্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের প্রচারে প্লাস্টিক ব্যবহার যতটা সম্ভব কম করতে হবে।
শহরের যে সব অঞ্চলে মূলত হোর্ডিং ও ফ্লেক্স তৈরির কাজ চলে, এই নির্দেশের পরে সেখানকার ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, এ বার প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি ফ্লেক্সের ‘অর্ডার’ অনেকটাই কম পাওয়া যাবে। বিকল্প হিসেবে কী ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছেন তাঁরা।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা যে নেহাত অমূলক নয়, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে কলেজ স্ট্রিট এলাকার বৈঠকখানা বাজার ঘুরে। লোকসভা ভোটই হোক বা বিধানসভা, অথবা পুরভোট। প্রতি বারই প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্স তৈরির জন্য রাত জেগে কাজ চলে ওই অঞ্চলের ছাপাখানাগুলিতে। শহরে ভোট প্রচারের সিংহভাগ সামগ্রী ছাপা হয় এখান থেকেই। কিন্তু প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কড়াকড়ির জন্য সেই তাল যেন কিছুটা হলেও কেটেছে এ বার। ব্যবসায়ীদের কথায়, পোস্টার-লিফলেট নয়। তাঁরা সব চেয়ে বেশি বরাত পেতেন ফ্লেক্স তৈরির। কিন্তু সেই ফ্লেক্সেই বেশ কিছুটা খামতি থেকে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তা হলে বিকল্প কী? বৈঠকখানা অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, তাঁত জাতীয় কাপড় অথবা গেঞ্জি-টুপির উপরে প্রার্থীর নাম ছাপার চল রয়েছে। পাশাপাশি, ভোট এ বার গরমের সময়ে। তাই ছাতার কাপড়ের উপরেও প্রার্থীর নাম লিখে প্রচারে জোর দেবেন তাঁরা। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের এমন নানা ভাবনার কথা বলব। ফ্লেক্স যদি একান্তই না থাকে, সেই খামতি তো পুষিয়ে নেওয়া চাই।’’
বৈঠকখানা বাজার এলাকায় কয়েক বছর ধরে ছাপাখানা চালাচ্ছেন অনির্বাণ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এক-এক জন প্রার্থীর প্রচারের জন্যই ১ লক্ষ বর্গফুটের মতো ফ্লেক্সের কাজ হয়। আমরা অন্তত দু’-তিন জন প্রার্থীর কাজ করি। এ বার তো নির্বাচন কমিশন বলেছে ফ্লেক্সের ব্যবহার কম করতে। সেই নির্দেশ মেনে অনেকেই হয়তো অর্ডার কম দেবেন।’’