কালবৈশাখী এড়াতে সকালের প্রচারে জোর প্রার্থীদের

কালবৈশাখীর সম্ভাবনা থাকায় বিকেলের বদলে সকালেই প্রচারে বেশি জোর দিচ্ছেন বেশির ভাগ প্রার্থী। যেমন, ঢাকুরিয়া কালীবাড়িতে পুজো দিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের প্রার্থী মিতা চক্রবর্তী।

Advertisement

অার্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:১৯
Share:

বালিগঞ্জে তৃণমূলের প্রচারে এই শিশুও। রবিবার সকালে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

কালবৈশাখীর দাপটে শনিবার রাতে শহরের রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও রবিবারের সকাল থেকেই রোদের তেজ ফের বেড়েছে আর সঙ্গে বেড়েছে গরমও। সেই গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই শহরের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল, বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেসের প্রার্থীরা সকাল থেকেই বেরিয়ে পড়লেন রবিবাসরীয় প্রচারে।

Advertisement

কালবৈশাখীর সম্ভাবনা থাকায় বিকেলের বদলে সকালেই প্রচারে বেশি জোর দিচ্ছেন বেশির ভাগ প্রার্থী। যেমন, ঢাকুরিয়া কালীবাড়িতে পুজো দিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের প্রার্থী মিতা চক্রবর্তী। ঢাকুরিয়া এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে প্রচার চালালেন তিনি। গরমের হাত থেকে বাঁচতে মাঝে মধ্যে জলের বোতলে চুমুক দিলেন। সেই সঙ্গে ভোটারদের বোঝালেন, কেন বিজেপি বা তৃণমূলকে ভোট না দিয়ে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া উচিত। মিতা বললেন, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপিকে যদি সরাতে হয় তা হলে তা পারবে একমাত্র কংগ্রেসই।’’ বিকেলে তিনি বেরিয়েছিলেন কালীঘাট

এলাকায় প্রচারে।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় সকালে বেরিয়েছিলেন গড়িয়াহাট এলাকায়। তাঁর মিছিলে

দেখা গেল সমর্থকদের হাতে হাতে বেলুন আর বড় বড় সাইজের ফ্লেক্স।

লম্বা একটি ফ্লেক্স সামনে নিয়ে হাঁটতে গিয়ে ঢাকা পড়ে গিয়েছে এক মহিলা তৃণমূল সমর্থকের মুখ। ফ্লেক্সে তৃণমূলের নতুন লোগোর ছবি, যেখানে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস কথাটা লেখা নেই। মালাদেবী বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের বলেছি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সব থেকে যোগ্য প্রার্থী। ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল ভারত গড়তে দিল্লিতে সরকার পাল্টাতেই হবে।’’ দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু সকালে ঢাকুরিয়া ও বিকেলে কসবা এলাকায় প্রচার করেন। সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় এ দিন সকাল থেকে প্রচার করেন কসবা এলাকায়।

ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গড়তে ডাক দিয়েছেন উত্তর কলকাতার সিপিএম প্রার্থী কনীনিকা বসুঘোষও। সকাল আটটা থেকেই তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ রোড এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ও অলিগলিতে। তিনি বলেন, ‘‘পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ভোটারদের বলেছি যে গত পাঁচ বছরে কর্মসংস্থান কমেছে, মহিলাদের নিরাপত্তা কমেছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের টাকা লুটও হয়েছে। এ সবের বিকল্প একমাত্র বামফ্রন্ট।’’ কনীনিকার আশা, মানুষ যদি ভোট দিতে পারেন তা হলে

উত্তর কলকাতায় এ বার শেষ হাসি হাসবে সিপিএম।

উত্তর কলকাতার বাগবাজার এলাকায় রবিবাসরীয় প্রচারে নেমেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গড়ার জন্য দেশের সব থেকে নির্ভরযোগ্য মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই, সুদীপ এলাকার মানুষদের মনে করিয়ে দেন। উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহ সকালে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে প্রচারে বার হন। রাহুলবাবু বলেন, ‘‘মানুষ এ বার নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন বলেই রাজ্যের শাসক দল

ভয় পাচ্ছে।’’

রবিবাসরীয় ভোটপ্রচার জমে উঠেছিল দমদমেও। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় সকাল সকাল বরাহনগর পুরসভার সাতটি ওয়ার্ডে প্রচার করেন। সৌগতবাবু বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছর ধরে নরেন্দ্র মোদীর জনবিরোধী নীতি, যেমন নোটবন্দি, জিএসটি নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি।’’

দমদমের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য আবার সকালে নাগেরবাজারে প্রচার করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রচারে ভোটারদের জানাচ্ছি স্থায়ী সরকার গড়তে হলে বিজেপিই একমাত্র দল।’’ সিপিএমের নেপালদেব ভট্টাচার্য বিকেলে প্রচার করেন রাজারহাট এলাকায়। কংগ্রেসের সৌরভ সাহা বিকেলে প্রচারে বেরোন দমদম ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়।

অন্য দিকে, যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য রবিবার বিকালে ভাঙড়ের ঘটকপুকুর থেকে ভাঙড় বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ধরে চলা একটি বিরাট মিছিলের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, ‘‘যারা সারদা-নারদা কেলেঙ্কারিতে সাধারণ মানুষের টাকা লুট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন