general-election-2019-west-bengal

প্রতি বিধানসভার ইভিএম পৃথক পথে পৌঁছবে গণনা কেন্দ্রে

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, স্ট্রং রুম থেকে গণনা কেন্দ্রে যেতে পথে যাতে কোনও বাধা না থাকে তার জন্য নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০১:৩৫
Share:

অভিভাবকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ কেন্দ্রীয় বাহিনীর। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

সাত দফায় ভোট গ্রহণ শেষ হতেই বিরোধীরা আশঙ্কা করেছেন, ইভিএম বদল করে ভোটের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে শাসক দল। সেই আবহাওয়ার মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার খোলা হবে ভোটবন্দি ইভিএম। বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে দিলেও স্ট্রং রুম থেকে গণনা কেন্দ্রে ইভিএম নিয়ে যাওয়ার পথের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, স্ট্রং রুম থেকে গণনা কেন্দ্রে যেতে পথে যাতে কোনও বাধা না থাকে তার জন্য নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইভিএম নিয়ে যাওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি ছাড়া সরকারি পদাধিকারী বা সংবাদ মাধ্যমের কেউ যাতে সেখানে না থাকেন, সেই নির্দেশও জারি করেছে কমিশন। একই সঙ্গে প্রতিটি বিধানসভার ইভিএমের পথ পৃথক করা হয়েছে। যাতে শুধুমাত্র একটি পথ দিয়েই একটি কেন্দ্রের ইভিএম স্ট্রং রুম থেকে গণনা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, যেখানে গণনার কাজ চলবে সেখানে পৌঁছতে নিরাপত্তার তিনটি স্তর পার হতে হবে। প্রথমে গণনা কেন্দ্রের বাইরে একটি বাঁশের ব্যারিকেড থাকবে। সেখানে নিরাপত্তা ও তল্লাশির দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশ। সেটি পার হওয়ার পরে আরও একটি নিরাপত্তার বলয় থাকবে। সেখানেও কলকাতা পুলিশের নেতৃত্বে তল্লাশি চলবে। সেখান থেকে গণনা কেন্দ্রের প্রধান গেটের সামনে পৌঁছনোর পরে ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মধ্য দিয়ে পার হওয়ার পরেই মূল গণনা কেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে। সেখানে পাহারায় থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। বর্তমানে তাঁরাই স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

Advertisement

সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকেরা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। প্রার্থী কিংবা রিটার্নিং অফিসারকেও মোবাইল নিয়ে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে তাঁদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রতিটি ভোট গণনা কেন্দ্রে। সেখানে তাঁরা ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।

কলকাতা পুলিশ এলাকায় মোট দশটি গণনা কেন্দ্র রয়েছে। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে গণনা হবে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের। যাদবপুর কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজে। এ ছাড়া ডায়মন্ড হারবার এবং কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে হেস্টিংস হাউস কমপ্লেক্স, ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ, বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুল, সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ঠাকুরপুকুর ব্রতচারী বিদ্যাশ্রম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল এবং বিবেকানন্দ কলেজে। এর মধ্যে হেস্টিংস হাউস কমপ্লেক্সে চারটি গণনা কেন্দ্র রয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

লালবাজার জানিয়েছে, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজ এবং হেস্টিংস হাউস কমপ্লেক্সে দু’জন করে ডেপুটি কমিশনারকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাকি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে ডেপুটি কমিশনার। তাঁরা আজ, বৃহস্পতিবার ভোর ছ’টা থেকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবেন। সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারেরা পুরো ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবেন। প্রতিটি ভোট গণনা কেন্দ্রের প্রবেশের গেটে এক জন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো প্রতিটি ভোট গণনা কেন্দ্রেই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দশ দফা নির্দেশ মেনে চলতে প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোট চার হাজার পুলিশ কর্মী ওই দশ কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।

কলকাতা পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছেন, ফল ঘোষণার পরে যাতে শহরের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে তার জন্য বুধবার রাতেই থানা এলাকার রাজনৈতিক দিক থেকে সংবেদনশীল এলাকাগুলিকে বেছে নিতে বলা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সেই সব জায়গায় পুলিশ পিকেট এবং মোটরবাইক টহলদারি শুরু হবে। লালবাজারের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘সব থানাকেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে যাতে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার মোকাবিলা করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন