Calcutta News

গেটে বজ্র আঁটুনি, ছাদে ফস্কা গেরো

প্রথমে গেটে এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ, নাম-ঠিকুজি লিখতে হবে। তার পরে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটের ‘টাওয়ার’-এর সামনে আর এক প্রস্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। তবেই ছাড়পত্র মিলবে ভিতরে যাওয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮ ০২:৪৯
Share:

আবাসন তো নয়, যেন দুর্গ!

Advertisement

প্রথমে গেটে এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ, নাম-ঠিকুজি লিখতে হবে। তার পরে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটের ‘টাওয়ার’-এর সামনে আর এক প্রস্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। তবেই ছাড়পত্র মিলবে ভিতরে যাওয়ার। কিন্তু এক বার ভিতরে ঢুকে গেলে নিরাপত্তার হাল কী? বিভিন্ন আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনাই বলে দিচ্ছে, বেশির ভাগ ছাদই কার্যত অরক্ষিত। মেনে নিচ্ছেন বিভিন্ন বহুতল আবাসনের বাসিন্দাও। অনেকেরই বক্তব্য, গেটে বজ্র আঁটুনি, অথচ ছাদে ফস্কা গেরো! যার সর্বশেষ উদাহরণ, রবিবার কাঁকুড়গাছির বহুতলের ছাদ থেকে এক মহিলার পড়ে যাওয়া। পুলিশ সূত্রের খবর, বহিরাগত ওই মহিলা ফুলবাগান থেকে ওই আবাসনে ঢুকলেও রক্ষীরা আটকাননি। ষোলোতলা ওই আবাসনে কার্যত কোনও নজরদারিই নেই!

বহুতলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল ২০১২ সালে। দক্ষিণ কলকাতার একটি আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে মা ও দুই মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তার তদন্তেই জানা গিয়েছিল, ওই ঘটনার আগে একাধিক বার ছাদে ঘুরে এসেছিলেন তাঁরা। তখনও কেউ দেখেননি তাঁদের। এর পরেও ওই আবাসন এবং লাগোয়া শপিং মলের ছাদ থেকে একাধিক বার ‘ঝাঁপের’ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরে স্থানীয় থানার সঙ্গে বৈঠক করে ওই আবাসনের ছাদ রক্ষী ছাড়া যাতায়াতের জন্য বন্ধ
করা হয়েছে।

Advertisement

শুধু ওই আবাসন নয়, শহরের নানা প্রান্তে নানা আবাসনেই ছাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে যেন গা ছাড়া মনোভাব। নিউ টাউনের একটি আবাসনে ছ’টি পনেরোতলার বাড়ি আছে। সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বাইরের কেউ এখানকার ছাদে উঠে গেলে তা ধরা পড়ার আশা বেশ কম।’’ শহরের আর একটি আবাসনের বাসিন্দার বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই বহিরাগতেরা ঢুকে পড়েন, আর হয়রানি সইতে হয় বাসিন্দাদের।

যদিও এখন কিছু আবাসনে ছাদে রক্ষী মোতায়েন না থাকলেও লিফ্‌ট বা সিঁড়িতে সিসিটিভি বসানো থাকে। তার মাধ্যমে নজরদারি হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আবাসনগুলির সঙ্গে বৈঠকে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেওয়া হয়। তবে বাস্তবে কিছু সমস্যাও আছে। যেমন ২০১০ সালে স্টিফেন কোর্ট অগ্নিকাণ্ডের সময়ে দেখা গিয়েছিল, ছাদের দরজা বন্ধ থাকায় অনেকে আগুন থেকে বাঁচতে পারেননি। তার পরেই নির্দেশিকা জারি করা হয়, বহুতলের ছাদের গেট খোলা রাখতে হবে। ফলে আবাসনের ছাদে তালা দিয়ে রাখার উপায় নেই। বড় মাপের আবাসনগুলিতে ছাদের দরজায় রক্ষী রাখতে বলা হয়। কিন্তু অনেক সময়ে রক্ষীদেরও গাফিলতি থাকে। আবাসিকেরাই বা কেন সক্রিয় হন না, প্রশ্ন ওঠে তা নিয়েও। শহরের একাধিক আবাসনের বাসিন্দার বক্তব্য, কোনও ঘটনা ঘটলেই ক’দিন নিরাপত্তার কড়াকড়ি হয়। তার পরে সব যে কে সেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন