জমি-কেলেঙ্কারির অন্যতম চক্রী অলোক বাজোরিয়াকে গ্রেফতার করল নিউ টাউন থানার পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
রাজারহাটের দক্ষিণ চক পাচুড়িয়ায় জমি-কেলেঙ্কারির অন্যতম চক্রী অলোক বাজোরিয়াকে গ্রেফতার করল নিউ টাউন থানার পুলিশ।
গত কয়েক বছর ধরে পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চক পাচুড়িয়া মৌজায় মালিকদের অজান্তেই তাঁদের জমি কোনও সংস্থার নামে হাতবদল হয়ে যাচ্ছিল। যার প্রেক্ষিতে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কার্যালয়ে তিনটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। রাজারহাটে জমি-মাফিয়াদের খপ্পরে পড়ে গ্রামবাসীরা যে জমি হারাচ্ছেন, সেই খবর নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছয়। বস্তুত, নবান্নের দ্বারস্থ হয়েই দক্ষিণ চক পাচুড়িয়ার বাসিন্দা নীলকান্ত মণ্ডল ন’টি খতিয়ানে বিভক্ত তাঁর এক বিঘা ১৩ কাঠা জমি ফেরত পান। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কার্যালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে নিউ টাউন থানার পুলিশ।
জেলা ভূমি রাজস্ব দফতরের এক কর্তা জানান, যে দলিলের ভিত্তিতে জমির মালিকানা বদল হয়েছে, তা যাচাই করে দেখা গিয়েছে, সেটি অন্য মৌজার জমির দলিল! বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে অর্ণব বসু নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি মিউটেশনের সময়ে বাজোরিয়াদের সংস্থার হয়ে রাজারহাটের সরকারি কার্যালয়ে হাজির থাকতেন। অর্ণবের কাছেই অলোকের নাম জানতে পেরে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। পুলিশ জানায়, অলোক ছাড়াও এই কাজে তাঁর ভাই বিকাশ এবং বাবা অশোক বাজোরিয়া যুক্ত বলে অভিযোগ। বিহারের বাসিন্দা বাজোরিয়া পরিবার সেখানেও একটি প্রতারণার ঘটনায় যুক্ত বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ২০০৭ সালে বাজোরিয়ারা কলকাতায় চলে আসেন। ছ’বছর আগে হাওড়ার পাঁচলায় জমি ব্যবসায় হাতেখড়ি তাঁদের।
পুলিশ জানায়, বাজোরিয়াদের সল্টলেকের অফিসে নথি জাল করার জন্য ভুয়ো সরকারি সিলমোহর তৈরি থাকত। অফিসের এক আধিকারিক জাল দলিল তৈরির বিষয়টি দেখতেন। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন আর এক জন। জমি দখলে নিতে ভুয়ো সাক্ষীরও ব্যবস্থা করা হত।
পুলিশ জানিয়েছে, অলোকের ভাই এবং বাবা পলাতক। কী ভাবে চক্রটি কাজ করত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।