মমতার স্পর্শে উড়ালপুল ফের দ্বিমুখী, চিন্তিত পুলিশ

পরমা উড়ালপুলের গাড়ির জট ছাড়াতে শনিবার কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, ওই উড়ালপুল দিয়ে ই এম বাইপাস থেকে গাড়ি পার্ক সার্কাসে আসতে পারবে। কিন্তু বাইপাসমুখী গাড়ি যেতে পারবে না সেখান দিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪২
Share:

পুনর্মূষিকো ভবঃ!

Advertisement

পরমা উড়ালপুলের গাড়ির জট ছাড়াতে শনিবার কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, ওই উড়ালপুল দিয়ে ই এম বাইপাস থেকে গাড়ি পার্ক সার্কাসে আসতে পারবে। কিন্তু বাইপাসমুখী গাড়ি যেতে পারবে না সেখান দিয়ে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উড়ালপুল পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিলেন, সেখান দিয়ে বাইপাস থেকে পার্ক সার্কাসের দিকে আসা এবং পার্ক সার্কাস থেকে বাইপাসে যাওয়া, দু’দিকেই গাড়ি চালাতে হবে। তবে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, যানজট বাড়লে পুলিশ ফের ‘ওয়ান ওয়ে’ করতে পারবে।

পুলিশেরই একাংশের ব্যাখ্যা, এই নির্দেশে যানজট কাটানোর সমাধান কিছু বেরোলো না। উল্টে শুক্রবার উদ্বোধনের পরে পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল, সেখানেই ফিরে গেল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর উড়ালপুল পরিদর্শনে ছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ এবং অন্য পুলিশকর্তারা। নির্দেশ পেলেও রাত পর্যন্ত লালবাজার এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার ও সোমবার ছুটির দিন হওয়ায় উড়ালপুল ‘ওয়ান ওয়ে’ করা ছিল। আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে ‘টু-ওয়ে’ গাড়ি চলাচল শুরু হলে বড় পরীক্ষার সামনে পড়তে পারে পুলিশ।

Advertisement

শুক্রবার ভুটান থেকে শহরে ফিরে এই উড়ালপুল উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘এই উড়ালপুলের ফলে শহরের রাস্তায় যানবাহনের গতি বাড়বে।’’ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করে চলে যাওয়ার পরেই উল্টো ফল হয়েছিল। দেখা যায়, শহরের রাস্তায় গতি তো বাড়েইনি, উল্টে উড়ালপুলের উপরেই গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। যার জেরে দক্ষিণ, মধ্য ও পূর্ব কলকাতার একাংশেও যান চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতেই কলকাতা পুলিশের ট্রাফিককর্তারা জানিয়েছিলেন, কাজের দিনে যানজট এড়াতে উড়ালপুলে একমুখী গাড়ি চলাচল করবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন রাত আটটা নাগাদ নেতাজি ইন্ডোর থেকে বেরিয়ে সোজা পার্ক সার্কাস হয়ে উড়ালপুলে উঠে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। যায় চিংড়িঘাটার দিকে। খবর পেয়ে আগেই সেখানে যান পুলিশ কমিশনার। সেখানে পৌঁছে ‘ইউ টার্ন’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উড়ালপুল ধরেই ফেরেন পার্ক সার্কাসের দিকে। চার নম্বর ব্রিজের কাছে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন তিনি। সিপি ও মেয়রকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সেতু থেকে নেমে পার্ক সার্কাস পৌঁছন। সেখানে অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেন। কেন একমুখী গাড়ি চালাতে হচ্ছে, জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকর্তারা জানান, পার্ক সার্কাসের কাছে উড়ালপুলটির একটি লেন রয়েছে। দু’লেনে গাড়ি এসে এক লেনে নামতে থাকায় সেখানে গাড়ি জমে যাচ্ছে। কংগ্রেস এগজিবিশন রোডে এ জে সি বসু রোড ফ্লাইওভারমুখী র‌্যাম্প তৈরি না হলে এই সমস্যা কাটবে না।

পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের কর্তাদের ব্যাখ্যায় মুখ্যমন্ত্রী আমল দেননি। তিনি বলেন, মানুষের সুবিধের জন্য দ্বিমুখী গাড়ি চালাতে হবে। মাথা নেড়ে সেই নির্দেশে সায় দেন কর্তারাও। যদিও লালবাজারের কর্তাদের অনেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন যে, কাজের দিনে দ্বিমুখী গাড়ি চালালে যানজট পাকানোর আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মানুষের অসুবিধা বাড়বে বই কমবে না। পুলিশের একাংশের দাবি, সেই কারণেই পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশ নিজের বিচারবোধে ব্যবস্থা নিতে পারবে, এমন একটি ‘পথ’ খোলা রাখা হয়েছে।

সেই পথ পুলিশ কতটা কাজে লাগাতে পারে, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন