মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এ বার বেয়াড়া বাইক

দুর্ঘটনা কমাতে এ বার দুরন্ত গতির বেপরোয়া মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করার নিদান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার বিধানসভায় স্বাস্থ্য বিল পেশ করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায় উঠে আসে মোটরবাইক দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘শক্ত আইন আনতে হবে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৮
Share:

বেপরোয়া: এ ভাবেই চলে ঝুঁকির যাতায়াত। ফাইল চিত্র

দুর্ঘটনা কমাতে এ বার দুরন্ত গতির বেপরোয়া মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করার নিদান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

শুক্রবার বিধানসভায় স্বাস্থ্য বিল পেশ করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতায় উঠে আসে মোটরবাইক দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘শক্ত আইন আনতে হবে। আইন আছে, আমি জানি। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। বেপরোয়া ভাবে গা়ড়ি চালানো কিংবা রাস্তায় গতির প্রতিযোগিতা করে দুর্ঘটনা ঘটালে আমি পুলিশকে বলব তাঁদের বাইক সরকার নিয়ে নেবে।’’

শুধু মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশই নয়, এ দিন বিধানসভায় মোটর ভেহিক্‌লস আইনকে আরও কঠোর করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, ‘‘বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে মেরে দেওয়ার পরে ভাববে, কয়েক দিন পরেই জেল থেকে বেরিয়ে যাব আর গাড়ির জন্য বিমার টাকা পেয়ে যাব। সুতরাং, তাঁদের কাছে দুর্ঘটনা জলভাত হয়ে গেল। অনেকে দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখেই না। তাই তাঁদের জন্য ওই আইনকে কঠোর করতেই হবে।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্বেগের বাস্তব ছবিটা এক সপ্তাহ আগেই দেখা গিয়েছিল। অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন ঘুরতে বেরিয়ে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোরী ও তার বন্ধুর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, উদ্দাম গতিতে ছুটে চলা ওই বেপরোয়া মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কামালগাজি উড়ালপুলে ধাক্কা মারে। রাস্তায় ছিটকে পড়ে ওই কিশোরী ও তার বন্ধু। কাউকেই বাঁচানো যায়নি।

পুলিশ সূত্রের খবর, পথ দুর্ঘটনা কমাতে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে মেনেই ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার শুরু করা হয়েছে। তাতে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পথ দুর্ঘটনা কমে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ। ওই প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহীদের পেট্রোল বিক্রি করার উপরে নিষেধাজ্ঞা চালু করেও সাফল্য মিলেছিল বলে পুলিশের দাবি। কলকাতার পুলিশকর্তাদের দাবি ছিল, ওই প্রচারের জন্যই গত বছরে অন্যান্য বছরের তুলনায় শহরে দুর্ঘটনার
সংখ্যা কমেছে।

এ দিন বিধানসভায় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মোটরবাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কখনও জোরে বাইক চালানোর জন্য বাইক থেকে পড়ে যাচ্ছে, কখনও হেলমেট ছাড়া বাইক চালনোর জন্য দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে। আট জন, দশ জন করে মারা যাচ্ছে। যাঁর বাড়ির লোক মারা যায়, তিনিই বোঝেন। রোগ-যন্ত্রণা কভু না বোঝে, হয়নি যে কভু রোগী। এ সব দেখে আমার খুব দুঃখ লাগে।’’ লালবাজার সূত্রের খবর, আইনে মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু তা সাময়িক। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলতে চেয়েছেন, তা ভাল ভাবে বোঝার পরেই এ ব্যাপারে আটঘাট বেধে পথে নামবে তারা।

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস ছয়েক আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি পথ দুর্ঘটনার পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো পুলিশের তরফে সেই তা কার্যকর করাও শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় জানান, অনেকে ওই আইনের অপব্যবহার করছেন। সেটা প্রশাসনকে দেখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন