—প্রতীকী চিত্র।
খোদ পুলিশের বাড়িতেই চোরের হানা!
দিন কয়েক আগে ভবানীপুর ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার গয়না ও নগদ টাকা চুরির ঘটনায় রবিবার রাতে পরিচারিকার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ছ’মাসে শুধু সার্ভে পার্কে থানা এলাকাতেই অন্তত আটটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে চারটি ঘটনার কিনারা হয়েছে। বাকিগুলি এখনও আঁধারেই।
ভবানীপুর ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট দেবজিৎ অধিকারী সার্ভে পার্ক থানার পূর্ব রাজপুর এলাকায় থাকেন।। দেবজিৎবাবুর স্ত্রী ঝর্না চক্রবর্তী অধিকারী সার্ভে পার্ক থানার পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ির আলমারিতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার সোনার গয়না ও নগদ আড়াই হাজার টাকা রেখেছিলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে আলমারি খুলে দেখেন, গয়না ও টাকা উধাও। রবিবার সার্ভে পার্ক থানায় চুরির অভিযোগ দায়ের করেন ঝর্নাদেবী।
ঝর্নাদেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই ঘটনায় বাড়ির পরিচারিকার যোগসাজশ থাকতে পারে। সেই মতো এলাকারই বাসিন্দা, পরিচারিকা ষষ্ঠী মণ্ডলকে জেরা শুরু করে পুলিশ। ষষ্ঠী স্বীকার করেন, এই ঘটনায় তাঁর স্বামী জড়িত। এর পরেই ষষ্ঠীর স্বামী বিমল মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের থেকে নগদ টাকা-সহ খোয়া যাওয়া গয়না উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে পরিচারিকার সঙ্গে তাঁর স্বামীরও যাতায়াত ছিল। ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পারিবারিক কাজে ওই আধিকারিক ও তাঁর স্ত্রী বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বিমল আলমারি খুলে গয়না ও টাকা হাতিয়ে নেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান।
শহরে চুরি, ছিনতাই লেগেই রয়েছে। এ মাসেই সার্ভে পার্কে থানা এলাকায় দু’টি বাড়িতে ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। যদিও এই দু’টি ঘটনার এখনও কিনারা হয়নি। বছর কয়েক আগে পঞ্চসায়র থানার নয়াবাদ এলাকায় এক পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে দরজার তালা ভেঙে সর্বস্ব লুঠ করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এ রকম লাগাতার চুরির ঘটনায় চিন্তায় লালবাজারের কর্তারা। বিগত কয়েকটি ক্রাইম বৈঠকে পুলিশ কমিশনার ছোটখাটো ঘটনাগুলিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা-ও চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার বিরাম নেই।
২০১১-র সেপ্টেম্বরে বেহালা ও যাদবপুর ডিভিশন, রাজ্য পুলিশের আওতা আওতায় আসার পরে অপরাধের সংখ্যা তুলনামূলক কমলেও সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে নেই। গত কয়েক মাসে বেহালা, যাদবপুর ডিভিশনে পরপর চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনাই তার প্রমাণ। ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আগের থেকে অপরাধ কমেছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’