পুলিশে চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু কারচুপির অভিযোগে ধরা পড়ে গেলেন পুলিশেরই জালে!
তবে যিনি ধরা পড়েছেন, সেই সোমজান শেখ আসল চাকরিপ্রার্থী নন। তিনি আসল চাকরিপ্রার্থী আমিরুল ইসলামের ভাই। পুলিশের অনুমান, আমিরুলের আশঙ্কা ছিল, কনস্টেবলের চাকরি পেতে গেলে যে ধরনের উচ্চতা, ওজন, ছাতি-র দরকার, তা তাঁর নেই। এমনকী চাকরি পাওয়ার জন্য যে ১৬০০ মিটার দৌড়তে হয়, সেই দমও তাঁর নেই। তাই তাঁর চেয়ে ভাল চেহারার সোমজানকে পাঠিয়েছিলেন কলকাতায়। আমিরুলের বাড়ি বর্ধমানের কেতুগ্রামে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সোমজান থাকেন নদিয়ার কালীগঞ্জে।
পুুলিশের কাছে জেরায় সোমজান জানিয়েছেন, তাঁরা দুই ভাই এ বছর কলকাতা পুলিশের কনস্টেবলের লিখিত পরীক্ষায় বসেছিলেন। আমিরুল পাশ করলেও সোমজান পাশ করতে পারেননি। এর আগে তিনি উচ্চমাধ্যমিকেও অকৃতকার্য হয়েছেন। আমিরুলের ডাক এসেছিল শারীরিক পরীক্ষার জন্য। তখন দুই ভাই মিলে ঠিক করেন, ওই পরীক্ষায় আমিরুলের জায়গায় সোমজান যাবেন।
শুক্রবার সকাল থেকে রেস কোর্সের মাঠে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগের সেই পরীক্ষা চলছিল। প্রথমে ছিল ওজন, উচ্চতা, ছাতি, কোমরের মাপজোকের পরীক্ষা। যাঁরা তাতে পাশ করেন, তাঁরা ১৬০০ মিটার দৌড়ের
জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সোমজানও। অ্যাডমিট কার্ডে সাঁটানো ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের মুখ মিলিয়ে দেখছিলেন পরীক্ষকেরা। সেই করতে করতে সোমজানের কাছে এসে থমকে যান তাঁরা। দেখা যায়, অ্যাডমিট কার্ডে সাঁটা ছবির সঙ্গে দৌড়ের লাইনে থাকা যুবকের মুখ মিলছে না। একটু মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষকেরা দেখেন, অ্যাডমিট কার্ডের ছবিতে কোনও কারসাজি করার চেষ্টা হয়েছে। তখনই লাইন থেকে সরিয়ে মাঠের এক পাশে নিয়ে যাওয়া হয় সোমজানকে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন মাস ধরে কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য শারীরিক মাপজোক এবং শারীরিক দক্ষতার পরীক্ষা চলছে ওই মাঠে। সোমজান ওই শারীরিক মাপজোকের পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। দুপুরে যখন জানা যায় যে তিনি ভুয়ো পরীক্ষার্থী, তাঁকে হেস্টিংস থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।