Electricity

জরিমানার নামে ভুয়ো পরিচয়ে টাকা আদায়, গ্রেফতার

গৃহকর্তাকে যে রসিদ দিয়েছিল ওই ব্যক্তি, সেটিও ভুয়ো!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৫৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দুপুরে বাড়িতেই ছিলেন গৃহকর্তা। সেই সময়ে তাঁর বাড়িতে আসেন এক বয়স্ক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী একটি সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে জানান, ওই বাড়িতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছে। তাই সংস্থার তরফে গৃহকর্তাকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা তখনই না-মেটালে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। সব শুনে ঘাবড়ে যান বাড়ির মালিক। দাবি মতো জরিমানার টাকা দিয়ে দিলে তাঁকে ওই বিদ্যুৎ সংস্থার একটি রসিদ দেন বয়স্ক ব্যক্তিটি। পরে বাড়ির মালিক জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি অন্য কোনও বাড়িতে যাননি। খোঁজ নিয়ে তিনি আরও জানতে পারেন, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ওই সংস্থাটি তাদের কোনও কর্মীকে পাঠায়নি এমন ভাবে টাকা আদায় করতে। এ-ও জানা যায়, গৃহকর্তাকে যে রসিদ দিয়েছিল ওই ব্যক্তি, সেটিও ভুয়ো!

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াসাঁকো থানা এলাকার মহাত্মা গাঁধী রোডে নাদিম হোসেন নামে এক জনের বাড়িতে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মহম্মদ সুলেমানকে তার তিলজলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি দীপনারায়ণ পাকড়াশি জানান, ধৃতকে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত বিচারক নীলম শশী কুজুর। চক্রের বাকি সদস্যদের খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা। ধৃত সুলেমানের থেকে ভুয়ো রসিদ-বই, ভুয়ো পরিচয়পত্র-সহ একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

কী ভাবে অভিযুক্তের সন্ধান মিলল?

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, পুরো ঘটনাটি জেনে অভিযোগকারী নাদিমের সঙ্গে কথা বলেন জোড়াসাঁকো থানার এক অফিসার। তিনি ভাল করে অভিযুক্তের চেহারার বিবরণ এবং তার কাজের পদ্ধতি জানতে চান। নাদিম সব খুলে বলতেই ওই অফিসার বুঝতে পারেন, অভিযুক্ত পুরনো অপরাধী। কয়েক বছর আগে একই কায়দায় ওয়াটগঞ্জে প্রতারণা করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল। এর পরেই বৃহস্পতিবার রাতে তদন্তকারী অফিসার ফাহাদ সোহেলকে নিয়ে সুলেমানের বাড়িতে যান জোড়াসাঁকো থানার ওই অফিসার। কিন্তু সেখানে অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি। পরে স্থানীয় কয়েক জন দুষ্কৃতীর সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারী অফিসার জানতে পারেন, কাছেই অন্য একটি জায়গায় থাকছে সুলেমান। সেখান থেকে তাকে ধরা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ওয়াটগঞ্জ থানার হাতে গ্রেফতার হয়েছিল সুলেমান। পরে আদালত থেকে জামিন পায়। কিন্তু লকডাউনের পরে ফের সে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার কর্মী সেজে মূলত বস্তি এলাকায় হানা দিয়ে জরিমানার নাম করে টাকা আদায় করত। কোথাও থেকে দু’হাজার, কোথাও থেকে তিন হাজার টাকা করে নিত। এই চক্রে সুলেমানের সঙ্গে আরও কয়েক জন যুক্ত বলে অনুমান পুলিশের। তদন্তকারীরা জানান, জেরায় ধৃত দাবি করেছে, জোড়াসাঁকো ছাড়া সম্প্রতি একবালপুরের কয়েক জায়গায় সে একই কায়দায় প্রতারণা করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন