rainfall

Rainfall: ভাসল হাসপাতাল চত্বর, ভোগান্তি রোগী ও কর্মীদের

রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়ার পরে সোমবারের টানা বৃষ্টিতে বানভাসি পরিস্থিতি হল শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share:

ভাসাভাসি: স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন চত্বরে দাঁড়িয়ে গিয়েছে জল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

হাঁটু সমান জমা জলে ভাসছে ওষুধের বাক্স থেকে জরুরি কাগজপত্র। কোথাও জল ঢুকেছে লিফটের গর্তেও। কোথাও আবার জলের মধ্যেই চলল রোগীদের বহির্বিভাগের টিকিট তৈরির কাজ। পা ডুবিয়ে অপেক্ষা করলেন রোগীরাও।

Advertisement

রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়ার পরে সোমবারের টানা বৃষ্টিতে বানভাসি পরিস্থিতি হল শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। একই অবস্থা শহরতলির হাসপাতাল ও বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতাল চত্বরেরও। রোগীদের প্রশ্ন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার, কিন্তু হাসপাতালগুলির বানভাসি ছবি বদলাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা কেন হয় না?’’ স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘হাসপাতালের জমা জলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পুরসভা ব্যবস্থা নেয়। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার প্রয়োজন থাকলে আমাদের সেটি জানানো হয়। তখন আমরা ব্যবস্থা নিই। এ দিনও পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েকটি হাসপাতালে পাম্প চালিয়ে দ্রুত জল নামানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

এ দিন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই চিকিৎসা করাতে আসেন অসংখ্য রোগী। এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, বেলেঘাটা আইডি, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, মারোয়াড়ি রিলিফ সোসাইটি, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ-সহ বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্ষিপ্ত ভাবে জল জমে যায়।

Advertisement

জল ঢুকেছিল এসএসকেএমের স্ত্রীরোগ বিভাগের একতলায়। সেখানে রয়েছে বহির্বিভাগ ও টিকিট কাউন্টার। জমা জল ঠেলেই যাতায়াত করতে হয়েছে রোগীদের। টিকিট কাউন্টারে জল ঢুকে যাওয়ায় চেয়ারে পা তুলে বসতে হয়েছে কর্মীদেরও। জল জমেছিল পিজি-র কার্ডিয়োলজি ও রোনাল্ড রস বিল্ডিংয়ের সামনে। তবে ভিতরে জল ঢোকেনি। পাম্প চালানোয় দুপুরের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘স্ত্রীরোগ বিভাগের একতলা অত্যন্ত নিচু। কোনও ভাবে মেঝে উঁচু করাও সম্ভব নয়। তাই খিদিরপুরের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে ওই বিভাগের কয়েকটি ওয়ার্ড সরানোর পরিকল্পনা হয়েছে।’’

বিকেলেও জলে ভেসেছে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের একতলা-সহ গোটা চত্বর। একতলায় রয়েছে স্টোর রুম, লিফট। স্টোর রুমে স্যানিটাইজ়ারের বোতল, ওষুধের বাক্স, স্যালাইনের বোতল ভাসতে দেখা গিয়েছে হাঁটুজলে। ডুবে যায় অক্সিজেন সিলিন্ডারও। তারই মধ্যে গামবুট পরে কাজ করেন কর্মীরা। লিফটের গর্ত জলে ভরে যাওয়ায় সেটি বন্ধ করে দিতে হয়। বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ সংযোগও। কেউ যাতে লিফটের বোতামে হাত না দেন, তার জন্য প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। তবে বিকেল পর্যন্ত ওই হাসপাতালে পাম্প চালানো হয়নি। সংলগ্ন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ‘সেন্ট্রাল ল্যাব’-এর সামনেও জমে ছিল জল।

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের জিবি এবং আইবি ব্লকের সামনে জল জমে থাকায় ভোগান্তি হয় রোগীর পরিজনদের। স্ট্রেচারও নিয়ে যেতে হয় জল ভেঙে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের রামমোহন ব্লকের সামনে জল জমায় ভুগতে হয়েছে মেডিসিন, কার্ডিয়োলজি ব্লকে আসা রোগীদের। রবিবার রাত থেকেই ভাসছে যাদবপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ। এ দিন হাঁটুজল জমেছিল পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালের ভিতরে। ওয়ার্ডে জল থাকায় স্যালাইন লাগানো অবস্থায় রোগীকে বেরিয়ে অন্যত্র যেতেও দেখা যায়। ভাসছিল রোগীদের শয্যার নীচে থাকা বর্জ্য ফেলার প্লাস্টিকের পাত্রগুলিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন