ভাল রাখার লড়াইকে সম্মানের ‘স্পর্শ’

এমনই কিছু মানুষকে সম্মান জানাতে শনিবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার সুবর্ণবণিক সমাজ প্রেক্ষাগৃহে বার্ষিক ‘হর্ষ অনুষ্ঠান’-এর আয়োজন করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্পর্শ’। এটি ছিল তাদের চতুর্থ বার্ষিক অনুষ্ঠান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৮:২০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রোজকার সংবাদপত্রের পাতা মনে করিয়ে দেয়, খুব একটা ভাল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি না আমরা। খুন, ধর্ষণ, জঙ্গি হানা, দুর্ঘটনায় ভারাক্রান্ত এই সময়। আর এই দৈনন্দিন অস্থিরতায় ক্রমেই আড়াল হয়ে যাচ্ছে সমাজের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা মানবিক অনুভূতিগুলি। কিন্তু আড়াল হলেও, বিলীন হয়ে যায়নি তারা। আছে মানুষেরই মধ্যে। আর সেই মানুষগুলো লড়ে যাচ্ছেন সমাজটা আর একটু সুন্দর করার জন্য, এগিয়ে দেওয়ার জন্য।

Advertisement

এমনই কিছু মানুষকে সম্মান জানাতে শনিবার সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতার সুবর্ণবণিক সমাজ প্রেক্ষাগৃহে বার্ষিক ‘হর্ষ অনুষ্ঠান’-এর আয়োজন করেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্পর্শ’। এটি ছিল তাদের চতুর্থ বার্ষিক অনুষ্ঠান। এই মঞ্চে সম্মান জানানো হল কিছু যোদ্ধাকে।

তালিকায় আছেন হাওড়ার এভারেস্ট আরোহী কুন্তল কাঁড়ার, যিনি বহু বছর ধরে কিছু অনাথ শিশুকে বড় করার দায়িত্ব পালন করছেন। তেমনই আছেন পুরুলিয়ায় শবর জনজাতির অধিকারের জন্য লড়াই করা অরূপ মুখোপাধ্যায়। আছেন দুঃস্থ, স্পেশ্যাল চাইল্ডদের আলো দেখানো এক মা— গোবরডাঙ্গার অমৃতা মুখোপাধ্যায়। আছেন শিক্ষক চন্দন মাইতি, যিনি নিজের উদ্যোগে সামাজিক ছুৎমার্গ ভেঙে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছেন সুন্দরবনের এক প্রত্যন্ত স্কুলে। একার উদ্যোগে দুঃস্থ মানুষদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করেছেন অশীতিপর বৃদ্ধা সুবাসিনী মিস্ত্রি। তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সম্মানিত করা হল বছর কুড়ির প্রজ্ঞাপারমিতা মণ্ডলকেও। কিশোরী বয়স থেকে তিনি মেদিনীপুর স্টেশন এলাকার পথশিশুদের আলো দেখাচ্ছেন। সম্মানিত হল একটি সংগঠনও, যারা স্থান-কাল-পাত্রের তোয়াক্কা না করে সারা বছর ধরে রক্তদাতা জুগিয়েছে অসংখ্য রোগীকে, আবার শীতের রাতে কম্বলের উত্তাপ দিয়েছে শহরের ফুটপাথবাসীদের।

Advertisement

অনুষ্ঠান জুড়ে আড়ম্বর নয়, কিন্তু আন্তরিকতা ছিল পুরো মাত্রায়। ছিল সেবা, সম্মান, সংহতি। বস্তুত, এই তিনটি শব্দই মূল মন্ত্র অনুষ্ঠানের। স্পর্শের সাধারণ সম্পাদক তাপসকুমার দে বললেন, ‘‘অনেকেই তো লড়াই করে চলেছেন এই সময়টাকে আর একটু সুন্দর করতে। কেউ সামনে থেকে, কেউ বা আড়াল থেকে। তাঁদেরকেই সম্মান জানাই আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন