‘তোলাবাজি’র প্রতিবাদে ময়দান মার্কেটে বন্ধ অনেক দোকান

একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তোলাবাজি বন্ধ করতে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সতর্ক করেছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকদেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৪
Share:

একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তোলাবাজি বন্ধ করতে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সতর্ক করেছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকদেরও। কিন্তু তা যে চলছেই, তার প্রমাণ মিলল বুধবার, ময়দান মার্কেটের অধিকাংশ দোকানের ঝাঁপ বন্ধের ঘটনায়। শাসক দলের মদতপুষ্ট এক নেতার তোলাবজির প্রতিবাদে এ দিন দোকান বন্ধ রেখেছিলেন এসপ্ল্যানেড চত্বরে ওই মার্কেটের (যা বিধান মার্কেট হিসেবেও পরিচিত) খেলার সরঞ্জাম বিক্রির ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ জানানো হয় পুলিশেও।

Advertisement

ময়দান মার্কেটের মূল কমিটি সূত্রে খবর, বাজারে প্রায় ৪৫০টি দোকান। এর মধ্যে শ’দুয়েক দোকান খেলার সরঞ্জামের। ওই সব দোকানে যে কারিগরেরা কাজ করেন, তাঁদের অনেকেই আবার আসেন বাইরে থেকেও। কমিটির এক সদস্যের কথায়, দীর্ঘদিনের এই বাজারে কোনও রাজনৈতিক জবরদস্তি ছিল না। নিশ্চিন্তেই ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু অভিযোগ, সম্প্রতি খেলার সরঞ্জাম বিক্রির দু’টি দোকানের মালিক রাজনীতির দাপট দেখাতে শুরু করেন। শাসক দলের তকমা নিয়ে একাধিক কারিগরের থেকে তাঁরা তোলা আদায় করতে থাকেন। যা দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। না দিলে তোলার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

ব্যবসায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের কথায়, বুধবার এই জোর-জবরদস্তি চরমে উঠলে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। তখনই দলের ভয় দেখিয়ে ওই দু’জন জোরজুলুম করার চেষ্টা করেন। বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টাও হয়। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। খেলার সরঞ্জামের দোকানিরা ঝাঁপ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী সাবধান করে দেওয়া সত্ত্বেও খাস ধর্মতলায় দলবল নিয়ে তৃণমূলের একাধিক নেতার ওই আস্ফালন মানতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। পুলিশের কাছে তোলাবাজির অভিযোগ জানায় মার্কেট কমিটি। কমিটির এক নেতার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীর ভরসাতেই ওঁরা এ সব করছেন।’’

Advertisement

এ দিকে, ময়দান মার্কেটে তোলাবাজির সঙ্গে তাঁর নেতৃত্বাধীন কোনও সংগঠনের কেউ যুক্ত নয় বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের শ্রমিক নেতা তথা বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এ দিনের ঘটনা নিয়ে বিশদে খবর নেবেন জানিয়ে শোভনদেববাবু বলেন, ‘‘বাম আমলে ওখানে আমার নেতৃত্বে একটি শ্রমিক সংগঠন তৈরি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পরবর্তী সময়ে তার কোনও ক্ষমতা ছিল না। ওখানে অন্য একটি সংগঠনের দাপটে দোকানের মালিক থেকে কর্মী, সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তারই ফলে এ দিন মালিক ও কর্মীদের একটি বড় অংশ মিলে মার্কেট বন্ধ করেছেন বলে শুনেছি।’’ মার্কেট বন্ধ করা নিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য পুলিশকে নজরদারি করার জন্য বলেছেন শোভনদেববাবু। ব্যবসায়ীদের তরফে রাতে জানানো হয়েছে, পুলিশি হস্তক্ষেপে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আজ, বৃহস্পতিবার খুলবে দোকানগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন