বিরল রোগের প্রচারে শহরে ম্যারাথন

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশের ১৩টি শহরে হবে এই দৌড়। সাত হাজার রোগের প্রতীক হিসেবে দৌড়ের নামকরণে ‘৭’ সংখ্যাটি থাকছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৬
Share:

বিরল রোগ কোনগুলি? এ দেশে ওই সব রোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো কী? চিকিৎসা নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার? সন্তানের রোগ ধরা পড়ার পরে কী ভাবে এগোবেন বাবা-মা? —এমনই সব বিষয় নিয়ে বিরল রোগে আক্রান্তের পরিবার ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এবং প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণে আগামী রবিবার এক ম্যারাথনের আয়োজন করেছে অর্গানাইজেশন ফর রেয়ার ডিজ়িজেস, ইন্ডিয়া (ওআরডিআই)। ক্যাসুরিনা অ্যাভিনিউ থেকে সকাল সাড়ে ছ’টায় শুরু হবে এই দৌড়। বিরল রোগে আক্রান্ত পঞ্চাশ জন শিশু এবং তাদের অভিভাবকেরা যোগ দেবেন। থাকবেন রাজ্যের অন্যত্র থেকে আসা রোগাক্রান্ত শিশুদের পরিজনেরাও। এই মিনি ম্যারাথনে অংশ নিতে পারবেন সাধারণ মানুষও।

Advertisement

গত তিন বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে ‘রেস ফর সেভেন’ নাম দিয়ে এই ম্যারাথনের আয়োজন করছে ওআরডিআই। গত বছর থেকে শুরু হয়েছিল মুম্বইয়েও। এ বছর বেঙ্গালুরু, মুম্বই, কলকাতার পাশাপাশি দেশের আরও দশটি শহরে এই মিনি ম্যারাথনের আয়োজন হবে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশের ১৩টি শহরে হবে এই দৌড়। সাত হাজার রোগের প্রতীক হিসেবে দৌড়ের নামকরণে ‘৭’ সংখ্যাটি থাকছে।

আসন্ন এই ম্যারাথন নিয়ে বৃহস্পতিবার শহরে হয়ে গেল এক সাংবাদিক সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত মলিকিউলার জেনেটিক্স বিজ্ঞানী দীপাঞ্জনা দত্ত বলেন, ‘‘মানব শরীরে থাকে ২২,০০০ জিন। যার মধ্যে বিরল রোগের কারণ হিসেবে পাঁচ হাজার জিনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে বিরল রোগ হয় জিনঘটিত কারণে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, ভ্রূণের ত্রুটিও এই রোগের অন্য কারণ। বিশ্বে এখনও সাত হাজার বিরল রোগের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে এ দেশে অস্তিত্ব মিলেছে মাত্র কয়েকশো বিরল রোগের।’’ এর মূল কারণ রোগ গোপনের প্রবণতা— জানাচ্ছেন দীপাঞ্জনা এবং ওআরডিআই-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর প্রসন্ন শিরোল।

Advertisement

সংস্থার সহকারী প্রতিষ্ঠাতাও প্রসন্ন। তাঁর একমাত্র মেয়ে বিরল রোগ পম্পির (মাংসপেশি অকেজো হয়ে যাওয়া) শিকার। গত পনেরো মাস ধরে কোমায় রয়েছে বাণিজ্য শাখার প্রথম বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণী। সরকারি উদাসীনতা সত্ত্বেও কী ভাবে প্রতি মুহূর্তে তাঁদের মতো অসংখ্য পরিবার লড়াই করছে, সে কথা জানান প্রসন্ন।

এ দিনের সম্মেলনে একই কথা উঠে এল স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি আক্রান্ত আট বছরের শিশুর মা মৌমিতা ঘোষের কথাতেও। ধরে আসা গলায় তিনি জানালেন, চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও বিপুল খরচের কারণে কী ভাবে অসহায় তাঁরা। চোখের সামনে একটু একটু করে সন্তানের অবনতির সাক্ষী থাকতে হতে হচ্ছে তাঁদের।

দাঁতে দাঁত চাপা এই লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা শুনে তখন নিস্তব্ধ সভাঘর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন