বিষ্ঠার বাধা ঠেলে শোভন-প্রচার

ভোট চাইতে গিয়ে যে এমন এক অভিযোগের সম্মুখীন হতে হবে, ভাবতে পারেননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সাত সকালে ভোটের প্রচারে যে রাস্তায় গিয়েছেন, নজরে এসেছে কুকুরের বিষ্ঠা। এর পরেই মঙ্গলবার বাড়ির কাছে ছাতা পার্কের এক বাসিন্দা নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাতেই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অর্থাৎ, মেয়রকে ওই মহিলা বলেন, “রোজ কুকুর রাস্তা নোংরা করে রাখে। হাঁটা যায় না। কিছু করুন।”

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৯
Share:

পা বাঁচিয়ে মেয়রের পদযাত্রা। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ভোট চাইতে গিয়ে যে এমন এক অভিযোগের সম্মুখীন হতে হবে, ভাবতে পারেননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সাত সকালে ভোটের প্রচারে যে রাস্তায় গিয়েছেন, নজরে এসেছে কুকুরের বিষ্ঠা। এর পরেই মঙ্গলবার বাড়ির কাছে ছাতা পার্কের এক বাসিন্দা নিবেদিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাতেই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অর্থাৎ, মেয়রকে ওই মহিলা বলেন, “রোজ কুকুর রাস্তা নোংরা করে রাখে। হাঁটা যায় না। কিছু করুন।”

Advertisement

কিছু দিন ধরে সকালে এলাকার বাড়ি বাড়ি প্রচার করতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা হয়েছে মেয়রেরও। তাঁর কথায়, “সত্যিই রাস্তায় চলা দায়। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও।” ব্যস, ওইটুকুই। এর বেশি যে তাঁর কিছু করার নেই, ঘনিষ্ঠমহলে তা জানাতেও কসুর করেননি শোভনবাবু। তাঁর কথায়, “শহর জুড়ে জঞ্জাল অপসারণের কাজে রয়েছেন পুরকর্মী ও ১০০ দিনের কর্মীরা। যতটা সম্ভব রাস্তা পরিষ্কার রাখেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের তো কুকুরের বিষ্ঠা সাফ করতে বলা যায় না।” নিবেদিতাদেবীরা বললেন, “প্রথম প্রথম ১০০ দিনের কর্মীদের ওই নোংরা সাফ করতে অনুরোধ করেছি। জবাবে তাঁরা জানাতেন, এ কাজ তাঁদের নয়।” বাসিন্দারা আতঙ্কে থাকেন কুকুরের উৎপাতেও। স্থানীয়দের সমস্যা মেয়রকে বোঝাতে পেরে খুশি নিবেদিতাদেবীও।

শুধু মেয়রেরই নয়, এমন অভিজ্ঞতা তাঁর দলের প্রার্থী তারক সিংহ, সুশান্ত ঘোষ, মানিক চট্টোপাধ্যায়, ইকবাল আহমেদ, সুমন সিংহ, দেবাশিস কুমার, পরেশ পাল, বাম প্রার্থী রঞ্জন দাশগুপ্ত, ফরজানা চৌধুরী, দীপু দাস, বিজেপির সুনীতা ঝাওয়ার, বিজয় ওঝা, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের অমিত মুখোপাধ্যায়, প্রকাশ উপাধ্যায়-সহ অনেকের।

Advertisement

পুর-হিসেবে বর্তমানে শহরে হাজার বিশেক ১০০ দিনের কর্মী রয়েছেন। যাঁদের কাজ জঞ্জাল সাফাই। হিসেব মতো এক একটি ওয়ার্ডেই দেড়শোর বেশি লোক নিযুক্ত। কিন্তু তাঁরা মূলত খাবারের উচ্ছিষ্ট, নষ্ট হওয়া সব্জি, ফল, কাগজ তুলে নিয়ে যায়। এক পুর-আধিকারিক জানান, এক সময়ে রাস্তার সব পরিষ্কার করতেন সাফাইকর্মীরা। এখন তা হয় না। মেয়র বলেন, “আরবান এমপ্লয়মেন্ট স্কিমে নিযুক্ত এই যুবকেরা স্নাতক, কেউ বা উচ্চমাধ্যমিক, মাধ্যমিক পাশ। ১০০ দিনের প্রকল্পে ঢুকেছেন।” তাই তাঁরা ওই কাজ করতে চান না বলে অনুমান একাধিক কাউন্সিলরের। তবে ভোট চাইতে গিয়ে নতুন এক সমস্যায় পড়েছেন মেয়র। বললেন, “কুকুর তো ধরাই যায়। কিন্তু শহরবাসীর একাংশ চান রাস্তার কুকুরের বন্ধ্যত্বকরণ হোক। আর এক দল এর বিপক্ষে। ফলে সমস্যা বাড়ছে। তবে নতুন বোর্ড আসার পরে এ নিয়ে একটি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মত মেয়রের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন