অযথা ব্যয়ে লাগাম টানতে চান নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।
শহরবাসীর প্রয়োজনে সরাসরি পুর পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কাজকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতার নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফলে বাতিল হয়ে গেল প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ‘সম্মতি’ প্রাপ্ত একটি প্রকল্পের প্রস্তাবও।
কলকাতার নতুন মেয়র হিসেবে ফিরহাদ (ববি) হাকিম সম্প্রতি মেয়র পরিষদের প্রথম বৈঠক করেন। পুর পরিষেবার কাজে জরুরি নয়, এমন প্রকল্পে অযথা ব্যয়ে যে তিনি লাগাম টানতে চান শুরুর দিনেই সে ইঙ্গিত দিয়েছেন ফিরহাদ। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র পরিষদের বৈঠকে সতীর্থ সদস্য এবং অফিসারদের তা জানিয়েও দিয়েছেন ফিরহাদ।
শুক্রবারের বৈঠকে পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর থেকে ৮১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় একটি ‘মাদারস রেস্ট শেল্টার’ গড়ার প্রস্তাব মেয়র পরিষদ বৈঠকে আনা হয়। সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল ওই ওয়ার্ড এলাকায় একটি স্কুলে প্রতিদিনই বাচ্চাদের জন্য মায়েরা এসে অপেক্ষা করেন। তাঁদের জন্য ফুটপাথের উপর ওই বিশ্রামঘর প্রয়োজন। যেটি তৈরিতে আনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পূর্বতন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও ওই প্রস্তাবটির ‘অনুমোদন’ করেছিলেন।
এত দিন পরে শুক্রবারই প্রথম ওই প্রস্তাব মেয়র পারিষদের বৈঠকে আলোচনার জন্য ওঠে। কিন্তু প্রস্তাব উঠতেই একাধিক মেয়র পারিষদ তার বিরোধিতা করে বলতে থাকেন ওই বিশ্রামঘর তৈরি পুরসভার কাজ নয়। একটা হলে সারা শহরে তা করতে হবে। তাতে পুরসভার ভাঁড়ার থেকে অনেক টাকা বেরিয়ে যাবে।
সূত্রের খবর, সব শুনে মেয়র জানান, শহরবাসীদের পুর পরিষেবা দেওয়ার জন্য দায়বদ্ধ পুরসভা। পানীয় জল, জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি ব্যবস্থার সঙ্গে জনস্বাস্থ্য এবং রাস্তাঘাট ঠিক আছে কি না, তা-ও নিয়মিত নজরে রাখতে হবে। এ জন্য কোনও কার্পণ্য করবে না পুর প্রশাসন। তবে মাদার্স শেল্টার, কমিউনিটি হলের মতো পরিষেবায় লাগাম টানা দরকার। শহরবাসীর প্রয়োজনে এ সব ততটা জরুরি নয় বলেই পুরকর্তাদের বক্তব্য।
সূত্রের খবর, বৈঠকে মেয়র জানিয়ে দেন, করের টাকায় পুর প্রশাসন চলে। তাই কোন কাজটা জরুরি, কোনটা নয় পুর প্রশাসনকেই তার বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে টাকা খরচের সময় খেয়াল রাখতে হবে কাজ যেন ঠিকঠাক হয়। সম্প্রতি সংযোজিত কলকাতার নিকাশির কাজে কেইআইআইপি-র ভূমিকা নিয়েও খুশি নন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি শুক্রবারের বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে পুর পরিষেবার কথা মাথায় রেখে খরচ করবেন। অযথা ব্যয় বন্ধ করতে হবে। পুরসভা সূত্রের খবর, বৈঠকে ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের মাদারর্স শেল্টার প্রস্তাবটিও নাকচ হয়ে যায়।