রুখলেন শোভনই

মেয়রের নিজের পাড়ায় পুকুর বুজিয়ে নির্মাণ

পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের পরিকল্পনা রুখে দিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবেশ ও আবাসন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। শহরের যে তল্লাটে এই পুকুর বোজানোর অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাচক্রে বেহালার সেই বনমালী নস্কর রোড মেয়রের পাড়া। তিনিই ওই ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪১
Share:

সেই জমির সামনে মেয়র। মঙ্গলবার। ছবি: অরুণ লোধ

পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণের পরিকল্পনা রুখে দিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবেশ ও আবাসন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। শহরের যে তল্লাটে এই পুকুর বোজানোর অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাচক্রে বেহালার সেই বনমালী নস্কর রোড মেয়রের পাড়া। তিনিই ওই ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি।

Advertisement

অথচ মেয়রের দাবি, তাঁকে অন্ধকারে রেখেই এই জলাশয় বোজানোর চক্রান্ত চলছিল। নজরে আসার পরে তিনিই জলাশয় বাঁচাতে উদ্যোগী হন। শোভনবাবু বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে পুরসভার যে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে, তাঁদেরও অবিলম্বে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে বনমালী নস্কর রোডে প্রায় ৪২ কাঠার একটি জমিতে পুকুর থাকা সত্ত্বেও বহুতল নির্মাণের পরিকল্পনা করে একটি বেসরকারি নির্মাণকারী সংস্থা। মেয়রের অভিযোগ, ওই ৪২ কাঠা জমির মধ্যেই প্রায় সাড়ে সতেরো কাঠার একটি পুকুর রয়েছে আলাদা ভাবে। সেটির কথা গোপন রেখেই পুরসভা থেকে বহুতল নির্মাণের অনুমোদন নেয় ওই সংস্থা।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে মেয়রের এই দাবি ঘিরেও। কারণ, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদও তিনি। এই প্রসঙ্গে শোভনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিদের নজর এড়িয়ে কী করে এই কাজ হল, তা জানতেই বাস্তুকার-সহ সব সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবেন না।’’ তিনি জানান, ১৯৯০ সালের পরে শহরের বহু জায়গায় পুকুর বুজিয়ে বাড়ি করার অভিযোগ উঠেছে। সেই সব জমির পুরনো রেকর্ড খতিয়ে যদি জলাশয় থাকার প্রমাণ মেলে, তা হলে পুরসভা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

মঙ্গলবার সকালে বনমালী নস্কর রোডের ওই প্লটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাড়ি ভাঙার কাজ শেষ। পুকুরের সঙ্গে বাস্তুজমির ব্যবধান রক্ষা করছে একটি পাঁচিল। তাই পুকুরটিতে যেতে হয় বেশ খানিকটা ঘুরে। স্থানীয় বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের অশোক ওঝা বলেন, ‘‘যে জমি ঘিরে এত বিতর্ক, তার মালিক ছিলেন জনৈক শচীবিলাস চৌধুরী। ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার ছিলেন আমার বাবা-মা। শচীবাবুর মৃত্যুর পরে এই জমি দেখভাল করতেন তাঁর ছেলেরা। আমরা এই পুকুরের পাশেই থাকি।’’

যে নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের এক জন প্রতিনিধি বাস্তুজমিতে বাড়ি ভাঙার কাজ দেখভাল করছিলেন। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নির্মাণকারী সংস্থার নাম এবং নিজের পরিচয়ও জানাতে চাননি।

মেয়র বলেন, ‘‘১৯৮৫ সালের রেকর্ড খতিয়েও দেখা গিয়েছে ওই জমিতে একটি জলাশয় আছে। পুরসভার অনুমোদিত পরিকল্পনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। জলাভূমি বাদ দিয়ে বাস্তুজমিতেই কাজ করতে হবে ওই সংস্থাকে। আর পুরসভা ওই জলাভূমি উদ্ধার করে সেটির সৌন্দর্যায়ন করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন