নষ্ট প্রচুর ওষুধ, টান জোগানেই

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আগুনের গ্রাস থেকে যে-সব ওষুধ বাঁচানো গিয়েছে, সেগুলোও আর ব্যবহারযোগ্য নেই। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ১০ ঘণ্টা পরেও ফার্মাসি বিভাগের তাপমাত্রা ছিল ৯০ ডিগ্রি। অগ্নিকাণ্ডে ঘরে যে-উত্তাপ ও ধোঁয়া তৈরি হয়েছে, তার জেরে ওষুধের মান নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ওষুধ। —নিজস্ব চিত্র

দিন সতেরো আগে বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের পরেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ওষুধের জোগানে টান পড়ার কথা জানিয়েছিল বেশ কয়েকটি হাসপাতাল। কেননা বাগড়ি মার্কেট ওষুধ সরবরাহেরও অন্যতম বড় বাজার। বুধবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ওষুধের সমস্যা আরও বাড়ল বলেই আশঙ্কা স্বাস্থ্য দফতরের।

Advertisement

এ দিন সকালে আগুন লাগে মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাসি বিভাগে আগুন লাগে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সাত কোটি টাকার ওষুধ মজুত ছিল। অগ্নিকাণ্ডের জেরে প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যার আনুমানিক বাজারি মূল্য পাঁচ কোটি টাকা। ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া, নাক-কান-গলা, মেডিসিন, চর্মরোগ ছাড়াও বিভিন্ন রোগের জীবনদায়ী দামি ওষুধ ওই বিভাগে রাখা হয়। তুলো, গজ, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও সংরক্ষিত থাকে সেখানে। ফার্মাসি বিভাগে হাসপাতালের সব বিভাগের প্রায় এক মাসের ওষুধ সংগ্রহ করা থাকে।

১৫ সেপ্টেম্বর শেষ রাতে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগে। নষ্ট হয়ে যায় কয়েক কোটি টাকার ওষুধ। রাজ্যের ডিরেক্টরেট অব ড্রাগ কন্ট্রোল বাগড়ি মার্কেটের যাবতীয় ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর জেরে শিশুদের টিকা-ওষুধের সমস্যা দেখা দেয়। কলকাতার অধিকাংশ হাসপাতালে তিন ও ছ’মাসের শিশুর ডিপথেরিয়া, পোলিয়ো, হেমোফিলিয়াস ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা যেত বাগড়ি থেকে। হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে সেই সঙ্কট ঘোরালো হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আগুনের গ্রাস থেকে যে-সব ওষুধ বাঁচানো গিয়েছে, সেগুলোও আর ব্যবহারযোগ্য নেই। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ১০ ঘণ্টা পরেও ফার্মাসি বিভাগের তাপমাত্রা ছিল ৯০ ডিগ্রি। অগ্নিকাণ্ডে ঘরে যে-উত্তাপ ও ধোঁয়া তৈরি হয়েছে, তার জেরে ওষুধের মান নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরিজনের অভিযোগ, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে অধিকাংশ ওষুধ নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এনআরএস কিংবা আরজি কর হাসপাতালে সরকারি ওষুধের দোকানে যেতে বলা হচ্ছে। এতে হয়রানি বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, ওষুধের সঙ্কট হবে না। রোগীদের প্রয়োজনীয় জীবনদায়ী ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে জোগানোর ব্যবস্থা হবে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না-হয়, সেই জন্য পরিকল্পনামাফিক কাজ হচ্ছে। ভর্তি থাকা রোগীদের ওষুধের জন্য অন্য হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে কয়েকটি ফার্মাসি কোম্পানির সঙ্গেও। ‘‘রোগী-পরিষেবায় কোনও সমস্যা হবে না। অগ্নিকাণ্ডের জেরে সাময়িক ভাবে দোকান বন্ধ থাকলেও সেই পরিষেবা দ্রুত চালু হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ওষুধের জোগানের ব্যবস্থা করবে হাসপাতাল,’’ বলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন