পুকুর বাঁচাতে বৈঠক পুরসভায়

কোনও এলাকা থেকে পুকুর ভরাটের ছবি মিললেই সেখানে পৌঁছে যাবেন পুরসভার অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারেরা। কোনও রকম বেআইনি কারবার ধরা পড়লেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

দাও ফিরে: খড়দহে ভরাট করে ফেলা ১৪টি পুকুরকে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলাশাসক। সেই মতো কাজ শুরু হয়েছিল সোমবারই। বুধবার রহড়ায় ভরাট করে ফেলা একটি পুকুরের মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ভাঙাচোরা রাস্তার পরে এ বার পুকুর ভরাট নিয়ে নাজেহাল পুর প্রশাসন। ই এম বাইপাস সংলগ্ন কয়েকটি ওয়ার্ডে জলাভূমি ভরাটের কাজ বন্ধ করতে মাসখানেক আগেই পুর প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই জেরে রাস্তা সারাই পর্ব চলার মধ্যেই এ বার পুকুর ভরাট রুখতে তৎপর হচ্ছেন পুরকর্তারা। বুধবার পুরভবনে এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে

Advertisement

সিদ্ধান্ত হয়েছে, শহরের কোথায় কত পুকুর আছে, তার তালিকা করতে ড্রোন ব্যবহার করা হবে। ড্রোনের দৃষ্টি থাকবে পুকুর ভরাট করে জমির চরিত্র বদলের ছবি তোলাতেও। কোনও এলাকা থেকে পুকুর ভরাটের ছবি মিললেই সেখানে পৌঁছে যাবেন পুরসভার অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারেরা। কোনও রকম বেআইনি কারবার ধরা পড়লেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ জানানো হবে সংশ্লিষ্ট থানাতেও। বৈঠকে দফতরের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার, পুর কমিশনার, বিশেষ পুর কমিশনার-সহ একাধিক দফতরের ডিজি-রা হাজির ছিলেন। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, পুকুর ভরাট রোখা। কোনও অভিযোগ এলে সরেজমিন গিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর এ বিষয়ে পুলিশকে রিপোর্ট দেওয়া হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় জলাভূমি সংরক্ষণের বিষয়টি দেখার জন্য পুরসভায় ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট’ (পিএমইউ) দফতর রয়েছে। এ দিনের বৈঠকে সেই দফতরের ডি়জি-সহ সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারকে জলাভূমি ভরাট রোখার কাজে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভার এক অফিসার জানান, ২০১৩ সাল থেকে শহরে ২৪৮টি পুকুর ভরাটের অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে সব ক’টি অভিযোগ যাচাই করা হয়নি। এর মধ্যে ১৪৭টির ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে ভরাটের বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েই ক্ষান্ত থেকেছে পুর প্রশাসন। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সমস্ত অভিযোগ আবার নতুন করে খতিয়ে দেখা হবে। সেই কাজ করবেন দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারেরা। তার পরে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করবেন তাঁরা। যা দেওয়া হবে পুলিশের কাছে। পুরকর্তারা জানিয়েছেন, কোথাও পুকুর বুজিয়ে নির্মাণকাজ চলার ঘটনা ঘটলে কর্তব্যে গাফিলতির দায় বর্তাবে পিএমইউ দফতরের উপরে। যদিও বৈঠকে পিএমইউ দফতরের ডিজি দাবি করেছেন, তেমন কোনও ঘটনার নজির নেই। তবে কোনও পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ হয়েছে বলে প্রমাণ মিললে তা ফের পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করবে পুর প্রশাসনই।

Advertisement

স্বপনবাবু জানান, পুকুর সংস্কারের পাশাপাশি জলাশয়ের সৌন্দর্যায়নের কাজও করা হবে। আর সংস্কার হওয়া পুকুর মাছ চাষের জন্য ভাড়াও দেওয়া হবে। তাতে পুরসভার আয়ও হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন