বাসের কমিশন প্রথা নিয়ে বৈঠক নিষ্ফলাই

সংগঠনের সহ-সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু ও স্বপন ঘোষের অভিযোগ, শেষ মুহূর্তে জানতে পারায় আসতে বৈঠকে পারেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি

রেষারেষির জেরে দুর্ঘটনা কমাতে বাসে কমিশন প্রথা তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ নিয়ে বাসমালিক সংগঠনগুলির মত জানতে বৈঠক ডেকেছিল পরিবহণ দফতর। কিন্তু বৃহস্পতিবারের সেই বৈঠকে সংগঠনের নেতারা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় বেশি দূর এগোতে পারলেন না পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। হল না কোনও সিদ্ধান্ত। তবে পরিবহণ কর্তারা জানিয়েছেন, দিন দশেক পরে ফের বাসমালিক সংগঠনগুলিকে বৈঠকে ডাকা হতে পারে।

Advertisement

বাসমালিক সংগঠনের কর্তাদের অভিযোগ, এ দিন সকালে আচমকা ফোন করে তাঁদের পরিবহণ ভবনে ডেকে পাঠানো হয়। তলব পেয়ে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি এবং জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্‌সের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হলেও আসেননি ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যেরা। সংগঠনের সহ-সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু ও স্বপন ঘোষের অভিযোগ, শেষ মুহূর্তে জানতে পারায় আসতে বৈঠকে পারেননি।

দুপুর ২টোর কিছু পরে পরিবহণ ভবনে শুরু হয় বৈঠক। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, এবং কলকাতার আরটিএ (রিজিওন্যাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি)-র আধিকারিকেরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পরিবহণ নিগমের অধিকর্তা নারায়ণস্বরূপ নিগম এবং পরিবহণ দফতরের কর্তারা। বাসমালিকেরা কমিশন প্রথা তুলে দিতে সম্মত আছেন কি না, বৈঠকের শুরুতেই তা জানতে চান পরিবহণ-অধিকর্তা। তখনই সব ক’টি সংগঠন বৈঠকে হাজির নেই জানিয়ে আপত্তি তোলেন বাসমালিকদের একাংশ। বৈঠকে উপস্থিত তিনটি সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য, দুর্ঘটনা কমানোর প্রশ্নে তাঁরা সরকারকে সর্বতোভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু এত বছর ধরে চলে আসা কমিশন প্রথা তুলে দিতে প্রায় কেউই রাজি হননি।

Advertisement

বৈঠকের পরে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি দীপক সরকার জানান, সরকারি বাসের থেকে বেসরকারি বাসের ভাড়া কম। তা ছাড়া, বেসরকারি বাসের চালকদের প্রায় ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। বাসকর্মীদের অনেকে আবার সারা মাস টানা কাজ করেন না। বরং সপ্তাহে তিন-চার জন মিলে একই বাস চালান। তাই হঠাৎ করে কমিশন প্রথা বন্ধ করে দিলে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। রাজ্যে ১৯৬৭ সাল থেকে এই প্রথা চালু রয়েছে। ‘‘নতুন ব্যবস্থা চালু করতে গেলে আগে ভেবে দেখা দরকার কী ভাবে আয় ও ব্যয়ের সমতা রক্ষা করা যাবে’’, বলছেন দীপকবাবু।

অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্রোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরাও চাই দুর্ঘটনা কমুক। কিন্তু যাঁরা বেতন নেবেন, সেই বাসকর্মীরা কী চাইছেন জানা দরকার।’’ জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্‌সের সহ-সম্পাদক টিটু সাহার কথায়, ‘‘কী ভাবে নতুন ব্যবস্থা চলবে, সে সম্পর্কে পরিবহণ দফতরের কাছে নির্দিষ্ট রূপরেখা চেয়েছি।’’

রাজ্য পরিবহণ নিগমের এক কর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কমিশন প্রথা তুলে দিতে বাসমালিকদের সঙ্গে আলোচনা চলবে। এ দিন সকলে আসেননি। দিন দশেক পরে আবার বৈঠক হবে।’’

শহরের প্রতি মুহূর্তের হেডলাইন, কলকাতার যে কোনও ব্রেকিং নিউজ পেতে ক্লিক করুন আনন্দবাজার পত্রিকার কলকাতা বিভাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন