Calcutta Tram Users Association

শহরে ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে ফের সরব ট্রামপ্রেমী সংগঠন 

গত ১৫ ডিসেম্বর পুলিশ এবং পুরসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বৈঠকের পরে মন্ত্রী জানান, কলকাতায় রাস্তার অপ্রতুলতার কারণে সব রুটে ট্রাম ফেরানো সম্ভব নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৫২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

শহরে ট্রাম রুট ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে আসার বিষয়টি নিয়ে দায়ের হওয়া দু’টি আলাদা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কলকাতায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বার করুক রাজ্য সরকার। আদালত আরও বলেছিল, কলকাতা পুলিশ এবং পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্য ট্রাম নিয়ে তাদের অবস্থান জানাক। সেই মতো গত ১৫ ডিসেম্বর পুলিশ এবং পুরসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বৈঠকের পরে মন্ত্রী জানান, কলকাতায় রাস্তার অপ্রতুলতার কারণে সব রুটে ট্রাম ফেরানো সম্ভব নয়। হাতে গোনা কয়েকটি রুটে ট্রাম চালানো যেতে পারে।

Advertisement

সরকারের এই অবস্থানে ক্ষুব্ধ ট্রামপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা। বুধবার বিশিষ্টজনেদের উপস্থিতিতে পাল্টা তথ্য তুলে ধরে ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হন সংগঠনের নেতৃত্ব। ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, ট্রামলাইন থাকার জন্য অহরহ বাইক দুর্ঘটনার অভিযোগ তোলা হয়। অথচ, তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চাওয়া একটি প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের দেওয়া তথ্যই বলছে, গত কয়েক বছরে ট্রামলাইনে মাত্র একটি দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংগঠনের নেতৃত্বের দাবি, ট্রামলাইন দিয়ে বাইক চালানোর সময়ে কী ধরনের সতর্কতা নেওয়া উচিত, পুলিশ বাইকচালকদের সচেতন করতে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে— এমন নানা প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। এ ছাড়া, ট্রামের কারণে যানজটের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তাঁরা দাবি করেন, বেআইনি পার্কিং এবং দখলদারির কারণে রাস্তা সঙ্কুচিত হয়েছে অনেক বেশি। যথেচ্ছ ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহারও যানজট বাড়াচ্ছে।

Advertisement

দেবাশিস জানান, অন্যান্য গাড়ির মতো ট্রাম যথেচ্ছ লেন বদল করে না। নির্দিষ্ট পথ ধরে চলে। ফলে যানজটের দায় ট্রামের উপরে চাপানো উচিত নয়। তাঁর অভিযোগ, একাধিক ট্রাম ডিপোর জমি বিক্রি করা হলেও রাজ্যের অন্য সরকারি পরিবহণ নিগমগুলির ডিপোর জমি বিক্রি করে কোষাগার ভর্তির চেষ্টা হয়নি। পরিবহণ নিগমের জমি ভাড়া দিয়ে টাকা আয় করা হলেও ট্রামের ক্ষেত্রে পাকাপাকি ভাবে জমি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘ট্রাম কলকাতার ঐতিহ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি যে ভাবে অন্যান্য ঐতিহ্য সংরক্ষণে ভূমিকা নিয়েছেন, সে ভাবে ট্রাম রক্ষাতেও সচেষ্ট হোন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন, ট্রাম ডিপোর জমি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। নগর পরিকল্পক দীপঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘পরিবেশের কারণে বহু জায়গায় ট্রাম ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সেখানে কলকাতায় ট্রাম তুলে দেওয়াটা ভাবা যায় না।’’ পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য বিষয়টি বিচারাধীন বলে এড়িয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন