Calcutta News

জল খরচ কত, জানতে আরও মিটার

কাশীপুর-বেলগাছিয়া সহ শহরের ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে ‘ওয়াটার লস ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভা প্রতি দিন যত পরিমাণ জল সরবরাহ করে, তার কতটা কাজে লাগছে এবং কতটা অপচয় হচ্ছে দেখতে ইতিমধ্যেই শহরের ছ’টি ওয়ার্ডে ‘ওয়াটার লস ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে ওই ছয় ওয়ার্ডে আবাসিক বাড়ির পাশাপাশি রাস্তার কলেও জলের মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ বার সেই প্রকল্পেরই অঙ্গ হিসেবে আনন্দপুর ও পাটুলি এলাকায় জলের মিটার বসাবেন পুর কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য, ওই এলাকায় জল খরচের হার জানা। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কাশীপুর-বেলগাছিয়া সহ শহরের ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে ‘ওয়াটার লস ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প। ওই এলাকায় যেখানে জলের সরবরাহ ভাল ও যেখানে জলের সমস্যা রয়েছে, এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের ঋণে কিছু দিন ধরে চলছে এই কাজ। তবে এখনও পর্যন্ত যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতেই চমকে উঠেছেন পুরকর্তারা। কারণ, মাথাপিছু বরাদ্দ করা জলের পরিমাণের থেকে ওই এলাকায় অনেক বেশি জল খরচ হচ্ছে বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। পুরো পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন পুরকর্তাদের একাংশ। আনন্দপুর ও পাটুলি এলাকায় ওই প্রকল্প চালু হলে একই ছবি উঠে আসবে কি না, তা নিয়েই চিন্তায় তাঁরা।

পুরসভা সূত্রের খবর, কাশীপুর-বেলগাছিয়া এলাকায় ওয়াটার লস ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প রূপায়ণের জন্য যে বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আনন্দপুর ও পাটুলিতেও তারা কাজ করবে।
তাদের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ও দেওয়া হয়েছে। তবে জলের মিটার বসাতে কিছুটা দেরি আছে বলে জানিয়েছেন পুরকর্তাদের একাংশ। কারণ, মিটার বসানোর আগে কয়েক দফা পরীক্ষা বাকি।

Advertisement

দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আগে পুরো এলাকার সমীক্ষা করবে। বিশেষজ্ঞ এনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ম্যাপ তৈরি করবে তারা। জলের অপচয় কমানোর জন্য নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করা হবে। তার পরেই শুরু হবে মূল প্রকল্পের কাজ। তাই প্রাথমিক পর্বের কাজ শুরু হতেই কমপক্ষে তিন মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন পুরকর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, প্রকল্পের জন্য রাস্তা কাটা বা জলের পাইপ মেরামতি অথবা মিটার বসানোর কাজ এখনই শুরু হচ্ছে না। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কী ভাবে জলের অপচয় কমানো সম্ভব, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা আগে আমাদের সবিস্তার প্রস্তাব দেবে। সেই প্রস্তাব গৃহীত হলে তবেই মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।’’

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘দ্য সেন্ট্রাল পাবলিক হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অর্গানাইজেশন’-এর (সিপিএইচইইও) নির্দেশিকা বলছে, দিল্লি, কলকাতা, মুম্বই-সহ বড় শহরগুলিতে দিনে মাথাপিছু ১৫০ লিটার জলের প্রয়োজন। সারা দেশে জল সরবরাহ ও পরিশোধনের ক্ষেত্রে সিপিএইচইইও প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু, কলকাতার এক থেকে ছ’নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ওখানে মাথাপিছু প্রায় ৬০০ মিটার জল খরচ হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তার কল থেকে এক দিনে ২০ হাজার লিটার জল বেরিয়ে যাচ্ছে, এমন তথ্যও ধরা পড়েছে! এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই ছ’টি ওয়ার্ডে জল খরচের যে হিসেব ধরা পড়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। আনন্দপুর-পাটুলিতে কাজ শুরু হলে সেখানেও জল অপচয়ের একটা হিসেব পাওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন