বাস দুর্ঘটনা রুখতে কমিশন বন্ধের নির্দেশ

পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, চালক ও কন্ডাক্টরদের আদায়কৃত যাত্রী ভাড়ার উপরে কমিশন দেওয়ার বদলে প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বেসরকারি বাসের রেষারেষির জেরে পরপর দুর্ঘটনায় নড়ে বসল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কমিশন প্রথা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার রাজ্যের বাসমালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের কসবায় পরিবহণ ভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মন্ত্রী। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁদের কমিশন বন্ধের নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে তা কার্যকর হবে, স্পষ্ট নয়। জেলার ক্ষেত্রে বাসের ছাদে যাত্রী তোলা বন্ধের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, চালক ও কন্ডাক্টরদের আদায়কৃত যাত্রী ভাড়ার উপরে কমিশন দেওয়ার বদলে প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। কমিশন প্রথার কারণে এক শ্রেণির বাসকর্মী রাস্তায় বেশি যাত্রী তোলার জন্য রেষারেষি করেন বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। দফতরের কর্তাদের মত, বেপরোয়া গতি ও নিয়ম ভেঙে বাস চালানোই অধিকাংশ দুর্ঘটনার কারণ।

দিন দশেক আগে দু’টি বাসের রেষারেষিতে ভিআইপি রোডে একটি বাস গর্তে পড়ে যায়। কয়েক জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। গত বুধবার দেশপ্রিয় পার্কের সামনে রেষারেষি করে ছুটতে থাকা একটি বাসের ধাক্কায় এক বয়স্ক মহিলার মৃত্যু হয়। বাসমালিক সংগঠন সূত্রে খবর, কলকাতা ছাড়াও দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়ায় বেসরকারি বাসে কমিশন প্রথা আছে। ওই ব্যবস্থায় বাসের টিকিট বিক্রি থেকে পাওয়া টাকার ১২ শতাংশ পান চালক। ৬ থেকে ৮ শতাংশ পান কন্ডাক্টর।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি, ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন ও অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির প্রতিনিধিরা যোগ দেন। বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট ও অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি পরিবহণমন্ত্রীর নির্দেশ মানতে রাজি হলেও অন্য সংগঠনগুলি আপত্তি জানায়। তাঁদের অভিযোগ, যে সব জেলায় কমিশন প্রথা নেই, সেখানেও দুর্ঘটনা ঘটে। কলকাতার রাস্তা সঙ্কীর্ণ। বহু রাস্তায় বেআইনি ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় রাস্তার পরিসর আরও কমে। একই রুটে একাধিক বাসের অনুমতি দেওয়ায় সমস্যা বাড়ছে বলেও অভিযোগ মালিকদের। জয়েন্ট কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তায় ট্র্যাফিকের হাল ফেরাক সরকার। নির্দিষ্ট নীতি তৈরি হোক। তার পরে ওই প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে।” অন্য দিকে, বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির তরফে রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “কমিশন বিলোপ করলে দুর্ঘটনা কমতে পারে বলে আমরাও মনে করি। জেলায় বাসের ছাদে যাত্রীদের ওঠা বন্ধ করতে প্রশাসনের আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন