বিধানসভার উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায়কে ফোন করার পরেই সিমকার্ডটি ভেঙে ফেলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অফিসার পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি। ভুয়ো পরিচয়ে ফোনের অভিযোগে বরাহনগরের বাসিন্দা জয়ন্ত গুহকে গ্রেফতারের পরে এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাপসবাবুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। অন্য প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অফিসার কৃষ্ণেন্দু দাস বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন শুরু করেন। ওই ব্যক্তি তাপসবাবুকে জানান, বরাহনগর থেকে আসা বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তভার রয়েছে তাঁর উপরে। প্রায় আট মিনিট কথা বলার পরে সন্দেহ হওয়ায় তাপসবাবু নবান্নে গিয়ে দেখা করার কথা বলতেই, পরে যোগাযোগ করে নেব বলে ফোন কেটে দেন ওই ‘অফিসার’। সন্দেহ কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে ফোন করে তাপসবাবু জানতে পারেন পুরো বিষয়টিই ভুয়ো। ওই নামে কোনও অফিসারই নেই। এর পরেই তদন্তে নামে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ ও বরাহনগর থানা।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে দেখা যায়, যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, সেটি বন্ধ করা রয়েছে। ওই নম্বরের সিমকার্ড যে মোবাইলে ব্যবহার হয়েছিল, তার আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করে বরাহনগরের বারুইপাড়া লেনের বাসিন্দা জয়ন্ত গুহ-র সন্ধান পান তদন্তকারীরা। তাঁকে আটক করে দীর্ঘক্ষণ জেরায় জানা যায়, অনেক দিন আগে ১৫টি সিম কিনেছিলেন পেশায় চানাচুর ও পাঁপড়বিক্রেতা জয়ন্ত। এর পরে কখনও কলেজে ভর্তি করে দেওয়া, কখনও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়া এবং চাকরি দেওয়া, নির্বাচনে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা হাতিয়ে ওই যুবক জালিয়াতি করতেন বলেই তদন্তে জেনেছেন গোয়েন্দারা। অভিযোগ, প্রতিটি কাজের পরেই তিনি সিম কার্ড ভেঙে ফেলে দিতেন। এ বারও তাপসবাবুকে ফোন করে তা-ই করেছিলেন ওই যুবক। তাপসবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ খুব তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেছে। কত মানুষকে প্রশাসনের নাম করে ওই যুবক প্রতারণা করেছেন। এদের কড়া শাস্তি হওয়া উচিত।’’