পুলিশ তাকে খুঁজে না পেলেও আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন পেয়ে গেলেন তিলজলায় গুলিচালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সন্তোষ রায়। পুলিশ সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন পান এলাকায় তৃণমূল যুব নেতা বলে পরিচিত ওই অভিযুক্ত।
কোনও ঘটনার পরে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের তড়িঘড়ি জামিনের ব্যবস্থার নজির রাজ্যে নতুন নয়। জামিন পাওয়ার পথ সুগম করতে বহু সময়েই নীরব থাকেন সরকারি আইনজীবীরা। আলিপুরে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরে হামলায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহার আগাম জামিনের ক্ষেত্রে আলিপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী কার্যত বিরোধিতা করেননি। দিন কয়েক আগেই রানিগঞ্জে একটি থানার ওসি-কে ফোনে হুমকি দেওয়ায় শাসক দলের ছাত্রনেতা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে আদালতে তোলা হলেও সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন না। ফলে সহজে জামিন পান ওই ছাত্রনেতা। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরেও ধৃত শাসক দলের ৭ ছাত্রনেতার জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবী। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সন্তোষ।
পুলিশের দাবি, ওই অভিযুক্তের জামিন-আবেদনের ব্যাপারে তাদের ঠিক সময়ে জানানো হয়নি। সন্তোষের আইনজীবীদের দাবি, ‘‘অস্ত্র আইনে মামলা করলেও পুলিশ তদন্তে কোনও অস্ত্র পায়নি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেই বিচারক জামিন মঞ্জুর করেছেন।’’
২২ জুলাই তিলজলায় এক মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাইকে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সন্তোষের শাগরেদ পাপ্পু ও তার দলবল তাঁদের পথ আটকে মারার হুমকি দেয়, গুলিও ছোড়ে। এর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। এই ঘটনায় সন্তোষ-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও অস্ত্র আইনের মতো জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছিল।
জামিন-অযোগ্য ধারা সত্ত্বেও কী ভাবে জামিন পেলেন সন্তোষ? পুলিশের দাবি, তারা জানত ওই দিন সন্তোষ জামিনের আবেদন করেছে। অভিযুক্তের আইনজীবীরা তাদের কিছু জানাননি। আদালতে কেস ডায়েরিও জমা দেওয়া হয়নি বলে লালবাজার সূত্রের খবর। সন্তোষের আইনজীবীদের অবশ্য দাবি, সরকারি আইনজীবী তাঁদের মক্কেলের জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু বিচারক সরকারি আইনজীবীর দাবি খারিজ করে জামিন মঞ্জুর করেছেন।