Sinthee police station

খাস কলকাতায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, ভাঙচুর সিঁথি থানায়

পুলিশ কর্মীদের একাংশের দাবি, জেরা চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন রাজকুমার সাউ। আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৫৮
Share:

সিঁথি থানার সামনে উত্তেজিত জনতার ভিড়। —নিজস্ব চিত্র

থানার মধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে অভিযুক্তের। পুলিশের মারেই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগে সোমবার সন্ধ্যায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর কলকাতার সিঁথি থানা। উত্তেজিত জনতা থানায় ঢুকে এলোপাথাড়ি ভাঙচুর চালায়। তাঁদের রোষে পড়েন থানার কর্মীরাও।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে,সিঁঁথি থানা এলাকায় একটি বহুতলে কল চুরির তদন্তে স্থানীয় নাইট শেল্টার থেকে এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মহিলা মূলত কাগজ কুড়ানি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে তাঁরা পাইক পাড়ায় রাজকুমার সাউয়ের দোকানে জিনিসপত্র বিক্রি করত।

বছর পঞ্চাশের রাজকুমারের পুরনো লোহা-লক্করের কেনা বেচার ব্যবসা। তাঁর ছেলে অজয় সাউ বলেন,‘‘ সকাল ১১ টা নাগাদ সিঁথি থানার পুলিশ বাবাকে থানায় নিয়ে যায়।” তাঁর দাবি, রাজকুমারবাবু সুগারের রোগী। তাঁর হৃদযন্ত্রও দুর্বল। অজয় জানিয়েছেন, রাজকুমার বাবুর সঙ্গে থানায় যান তাঁর ছোট ভাই। কিছুক্ষণ পর তিনি নিজেও থানায় পৌঁছন।

Advertisement

অজয়ের অভিযোগ, ‘‘এস এন দাস নামে এক সাব ইন্সপেক্টর প্রথমে বলেন একটা বয়ান রেকর্ড করা হবে বাবার। কিন্তু কিছু পরে পুলিশ দাবি করে, ১ লাখ ২০ হাজার টাকার চোরাই জিনিস কিনেছেন আমার বাবা।” অজয়ের দাবি, এর খানিক পরই পুলিশ তাঁদের বলেন যে রাজকুমার বাবুর শরীর খারাপ। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর পরই তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাজকুমার বাবুকে নিয়ে যান আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মৃত রাজকুমার সাউ। —নিজস্ব চিত্র

অজয়ের অভিযোগ, থানার মধ্যে জেরা চলাকালীন পুলিশ তাঁর বাবাকে মারধর করে। তার জেরেই রাজকুমার বাবুর মৃত্যু বলে দাবি তাঁর পরিবারের।

আরও পড়ুন: কেজরীর থেকে শিক্ষা? ভোটের আগে মমতাময়ী বাজেট রাজ্যের

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজকুমারের পরিবারের লোকজন এবং এলাকার বাসিন্দারা জমায়েত হন থানার সামনে। তাঁদের অভিযোগ পুলিশের মারেই মৃত্যু হয়েছে রাজকুমারের। ওই জমায়েত থেকেই একটি অংশ হঠাৎ করে মারমুখী হয়ে ওঠেন এবং থানাপ মধ্যে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে বড় পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ডিসি(উত্তর) জয়িতা বসু। কলকাতা পুলিশের উত্তর ডিভিশনের বিভিন্ন থানা থেকেও অতিরিক্ত বাহিনী পৌঁছয়। থানার সামনের মূল লোহার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আসে। এখনও পুলিশের তরফে গোটা ঘটনা সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এক পুলিশ কর্তা বলেন,‘‘ আমরা মৃতের পরিবারকে অভিযোগ জানাতে বলেছি। মৃতের ময়না তদন্ত হবে। দেখা হবে কোনও আঘাতের চিহ্ন আছে কি না।” অন্য এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন,‘‘ঘটনার তদন্ত হবে। তদন্তে কি পাওয়া যায় তার উপর পরবর্তী পদক্ষেপ করবে পুলিশ।”

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস: ‘আমাদের বাঁচান’, হাত জড়ো করে মোদীর কাছে আর্তি বাঙালির

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন