গুগ্ল ম্যাপে এসেছিল আগেই। এ বার সরকারি বাসের সবিস্তার তথ্য আসছে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনেও। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২১ জানুয়ারি থেকে সাধারণ যাত্রীদের হাতের নাগালে চলে আসবে ওই মোবাইল অ্যাপ।
কী থাকবে ওই অ্যাপে?
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার তিনটি পরিবহণ নিগম— কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি), পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম (ডব্লিউবিএসটিসি) ও কলকাতা স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএসটিসি) মিলিত হয়ে তৈরি হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (ডব্লিউবিটিসি)। ওই নিগমের যাবতীয় তথ্য থাকবে মোবাইল অ্যাপে। নির্দিষ্ট স্টপেজে দাঁড়িয়ে মোবাইলে অ্যাপ খুললেই যাত্রী দেখতে পাবেন, তাঁর আশপাশে কোথায় সরকারি বাস রয়েছে। অ্যাপে গন্তব্য লিখে দিলে তিনি জানতে পারবেন, সেখানে যাওয়ার কোন কোন বাস রয়েছে, ঠিক ওই সময়ে তাদের অবস্থান কোথায়, কতক্ষণেই বা বাসটি ওই স্টপেজে এসে পৌঁছবে, গন্তব্যে পৌঁছতেই বা তার কতক্ষণ সময় লাগবে। এমনকী, বিশেষ কোনও কারণে বাসটির রুটের পরিবর্তন হলে তা-ও জানা যাবে অ্যাপেই।
এখানেই শেষ নয়, নির্দিষ্ট বাসে ‘ক্লিক’ করলে যাত্রী জানতে পারবেন, বাসটি ঠিক কোন রুট দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছবে। বাসটিতে যাত্রী সংখ্যা মোটামুটি কত, বসার জায়গা আছে কি না, ঠাসাঠাসি ভিড়ই বা রয়েছে কি না। এ ছাড়া, অ্যাপেই যে কোনও সময়ে জানা যাবে ওই দিনে নিগমের ক’টি বাস চলছে। কোন কোন রুটে কোন সময়ে চলছে, থাকবে তার সবিস্তার তথ্যও।
চালকের জন্য চালু হচ্ছে ড্রাইভার্স অ্যাপ। এ ক্ষেত্রে চালকের ড্যাশ বোর্ডেই রাখা মোবাইলে একটি অ্যাপ খোলা থাকবে। তার মাধ্যমে চালকের সরাসরি যোগাযোগ থাকবে পরিবহণ নিগমের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে। চালক যেমন নিয়মিত ওই অ্যাপে নির্দেশ পাবেন, তেমনই তিনিও একই পথে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারবেন কন্ট্রোল রুমকে। আবার, রাস্তায় কোথাও কোনও গণ্ডগোল হলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল রুমকে খবর দেওয়ার সুযোগ থাকছে অ্যাপে। তেমনই সংশ্লিষ্ট বাসের রুটে কোনও মিছিল বা অবরোধ থাকলে কন্ট্রোল রুম আগেভাগেই বিষয়টি চালককে জানিয়ে তাঁর রুট বদলে দিতে পারবে।
তবে অ্যাপে বাসের অবস্থান ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য মিললেও এখনই তাতে বাসের টিকিট কাটার থাকছে না। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় প্রাথমিক ভাবে মোবাইল অ্যাপটি তৈরি হচ্ছে। তা চালু হওয়ার পরে সাফল্য মিললে অ্যাপে টিকিট কাটার ব্যবস্থাও চালু হবে।’’
মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে যাত্রীদের জন্য চালু হচ্ছে স্মার্ট কার্ডও। কলকাতার ২০টি জায়গায় প্রাথমিক ভাবে মেট্রো রেলের মতো ওই কার্ডে টাকা ভরতে পারবেন যাত্রীরা। বাসে উঠে কন্ডাক্টরদের ওই কার্ড দিলেই তা থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ মেশিনে কেটে নিয়ে তা যাত্রীদের ফেরত দেবেন তাঁরা। এর আগে সিএসটিসি-তে এমনই একটি স্মার্ট কার্ড তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। কিছু সমস্যায় তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এ বারের স্মার্ট কার্ডে সে সমস্ত সমস্যা নেই বলেই দাবি পরিবহণ কর্তাদের।