সন্তোষ রায় রোড

যেন এক বৃহত্তর পরিবার

পাড়া মানেই কিছু সম্পর্ক, অনুভূতি আর উপলব্ধি। এর সঙ্গে মিশে আছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর আর জীবনের অম্লমধুর অভিজ্ঞতা।

Advertisement

মনোময় ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৪
Share:

পাড়া মানেই কিছু সম্পর্ক, অনুভূতি আর উপলব্ধি। এর সঙ্গে মিশে আছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর আর জীবনের অম্লমধুর অভিজ্ঞতা। এখানে অপরিচিতেরাও হয়ে ওঠেন পরিচিত, গড়ে ওঠে নতুন বন্ধুত্ব। এ ভাবেই নিজের পরিবারের গণ্ডির বাইরে তৈরি হয় আরও এক বৃহত্তর পরিবার। সেটাই আমার পাড়া। আমার পাড়া বেহালার সখের বাজার অঞ্চলে সন্তোষ রায় রোড।

Advertisement

পাড়াটা নতুন পুরনো বাড়ি আর বহুতলের ভিড়ে জমজমাট। ফ্ল্যাট কালচারের প্রভাব এখন সকলে সকলকে না চিনলেও, আবাসনের প্রতিবেশী কিংবা আশেপাশের বাড়ির মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগটা আছে।

তবে সমস্যাও আছে। ডায়মন্ড হারবার রোডের ধার ঘেঁষা এই পাড়ায় গত কয়েক বছরে যান চলাচল বেড়েছে। কারণ, ডায়মন্ড হারবার রোডে মেট্রোর কাজ চলায়, রাস্তার একাংশ বন্ধ। ফলে ওই রাস্তায় যানচলাচলের চাপ কমাতে পাশের রাস্তাগুলি ব্যবহার হচ্ছে। তাই অতিরিক্ত যান চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সেই পাড়া-পাড়া ব্যাপারটা উধাও হয়েছে। তীব্র গতিতে ছুটে আসা বেপরোয়া যান-বাহনের দাপটে বয়স্ক আর ছোটদের চলাফেরায় অসুবিধা হয় বইকী। যান নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ থাকলে ভাল হত।

Advertisement

এলাকার কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে ভালই কাজ করছেন, জল ও নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। আগে পানীয় জলের সমস্যা থাকলেও এখন আর নেই। তবে আরও কিছু জোরালো আলো লাগালে পাড়াটা রাতে উজ্জ্বল থাকত। কাছাকাছির মধ্যে তৈরি হচ্ছে সুইমিং পুল এবং কমিউনিটি সেন্টার। আগে রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপ থাকলেও এখন সেখানে বসেছে কমপ্যাক্টর। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভ্যাটগুলি সরিয়ে ফেলায় দুর্গন্ধ থেকে এলাকাবাসী রেহাই পেয়েছেন।

আগের তুলনায় আড্ডা কমলেও পাড়ায় ক্লাবকেন্দ্রিক কিছু আড্ডা দেখা যায়। এখনও সন্ধ্যায় কিছু চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দেখা যায় এলাকার প্রবীণদের। আমাদের পাড়ায় বড়িশা ক্লাবের পুজো দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। এ ছাড়া আমাদের আবাসনেও হয় দুর্গাপুজো। তাই পুজোর ক’টা দিন প্রতিবেশীদের দেখাসাক্ষাৎ আর আড্ডার সুযোগ ঘটে। খেলার পরিবেশটা আর আগের মতো নেই। কাছাকাছির মধ্যে কোনও খেলার মাঠ না থাকায় ছোটদের খেলতে অসুবিধা হয়। তবে আবাসনের ছোটরা নীচেই খেলাধুলো করে।

দেখতে দেখতে কখন জানি নিজের অজান্তে এটাই হয়ে উঠেছে আমার নিজের পাড়া। আরও অভিজাত, ঝাঁ-চকচকে পাড়ায় থাকার সুযোগ এলেও এ পাড়াটা ছাড়তে পারব না। হয়তো এর প্রেমে পড়ে গেছি!

লেখক সঙ্গীতশিল্পী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন