অনুপম ভাল ছেলে ছিল: মনুয়ার বাবা

বারাসতের হৃদয়পুরে ২০১৭ সালের ২ মে অনুপম নিজের বাড়িতে খুন হন। তার কিছু দিনের মধ্যেই অনুপমের স্ত্রী মনুয়া ও মনুয়ার প্রেমিক অজিত রায়কে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪০
Share:

মনুয়া মজুমদার

জামাইকে খুনের অভিযোগে ধরা হয়েছে তাঁর মেয়েকে। তাকে খুনের মূল ষড়যন্ত্রী বলে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এখন চলছে তারই বিচার। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে সেই মামলারই শুনানিতে এসে অভিযুক্ত মনুয়া মজুমদারের বাবা নির্মল মজুমদার জানালেন, জামাই অনুপম সিংহ ভাল চরিত্রের ছেলে ছিলেন।

Advertisement

বারাসতের হৃদয়পুরে ২০১৭ সালের ২ মে অনুপম নিজের বাড়িতে খুন হন। তার কিছু দিনের মধ্যেই অনুপমের স্ত্রী মনুয়া ও মনুয়ার প্রেমিক অজিত রায়কে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন সেই মামলারই শুনানিতে নির্মলবাবুকে আইনজীবী প্রশ্ন করেন, তাঁর জামাই অনুপমের কোনও দোষ-ত্রুটি ছিল কি না। তিনি কেমন স্বভাবের মানুষ ছিলেন, জানতে চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতেই নির্মলবাবু মাথা নেড়ে জানিয়ে দেন, তাঁর কোনও দোষ-ত্রুটি ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘আমার জামাই ভাল স্বভাবের ছেলে ছিল।’’

অনুপমের খুনের খবরও নির্মলবাবুই প্রথম জানিয়েছিলেন পুলিশকে। তাঁরই উদ্যোগে ঘটনার পরপর খুনের কিনারা চেয়ে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তবে তখনও কেউই জানতেন না আসল খুনি কে। সে সময়ে পুলিশকেও বিভ্রান্ত করার ছক কষেছিল অভিযুক্তেরা। এর পরেই মনুয়া এবং অজিতকে
গ্রেফতার করে পুলিশ। ফরেন্সিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে মোবাইলের টাওয়ার ধরে ধরে তথ্যপ্রমাণ সাজিয়ে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে খুনের চার্জশিট পেশ করে পুলিশ।

Advertisement

ওই মামলায় মনুয়ার পক্ষে কে আইনজীবী হবে, তা নিয়ে সমস্যা চলছিল। এ দিন ওই আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের নির্দেশেই মনুয়ার আইনজীবী হিসেবে সুব্রত বসু নির্মলবাবুকে সওয়াল করেন। আইনজীবীর প্রশ্ন ছিল, খুনের খবর পেয়ে তিনি যখন ঘটনাস্থলে যান, তখন পুলিশের তদন্তকারী অফিসার ছিলেন কি না। নির্মলবাবু জানান, তদন্তকারী অফিসার সেখানেই ছিলেন।

আইনজীবী এ দিন একটি ছবিও দেখান তাঁকে। তা দেখে নির্মলবাবু বলেন, ‘‘হ্যাঁ, এটা আমার মেয়ে-জামাই, মনুয়া ও অনুপমের বেড়াতে যাওয়ার ছবি। মধুচন্দ্রিমা ছাড়াও রাজস্থান, তাইল্যান্ড, ভাইজ্যাকের মতো কিছু জায়গায় ওরা বেড়াতে গিয়েছিল।’’ অনুপমের বেতন কত ছিল জানতে চাইলে নির্মলবাবু জবাব দেন, ‘‘বেতন কখনও জামাইকে জিজ্ঞেস করিনি। তবে মেয়ের কাছ থেকে শুনেছি, মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা মতো পেত।’’ অনুপমের আত্মীয়েরা হাবরা, মধ্যমগ্রাম, বারাসতে থাকেন বলেও জানান নির্মলবাবু।

এ দিন আদালতের এজলাসে মনুয়া ও অজিত অবশ্য কোনও কথাই বলেননি। মামলা চলাকালীন আদালত চত্বরে কাঁদছিল অনুপমের পরিবার। তাঁরা মনুয়া ও অজিতের ফাঁসির দাবিও জানান। নির্মলবাবুকে পরে ফের সওয়াল করা হবে বলে এ দিন জানিয়ে দেন সুব্রতবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন