নোট-কাণ্ডে বন্ধ নিধন, পোয়াবারো মশাদের

ডেঙ্গির মরসুমের শুরুতে বিধাননগর পুর নিগম এলাকায় মশা নিধনের কাজ ব্যাহত হয়েছিল পরিকাঠামোর অভাবে। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের মশা নিধনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে নোট বাতিলের চক্করে।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় ও কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৪৩
Share:

ডেঙ্গির মরসুমের শুরুতে বিধাননগর পুর নিগম এলাকায় মশা নিধনের কাজ ব্যাহত হয়েছিল পরিকাঠামোর অভাবে। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের মশা নিধনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে নোট বাতিলের চক্করে। রোজের টাকা রোজ না পেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের অস্থায়ী কর্মীদের অনেকে কাজে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। যার জেরে ফের বিধাননগরে মশা নিধনের কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বিধাননগর পুর নিগমের স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় অস্থায়ী কর্মীরা অনেকে কাজে আসছেন না। যাঁরা এখনও কাজ ছাড়েননি, তাঁরা প্রতিদিনই বেতনের জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডে ৯০ জন অস্থায়ী কর্মীর বেতন আটকে রয়েছে। তাঁরা মশার তেল, ধোঁয়া, ব্লিচিং ছড়ানোর কাজ করেন। মেয়র পারিষদ বলেন, ‘‘মশা মারার কাজ বন্ধ হয়নি, তবে অস্থায়ী কর্মীদের অভাবে কাজের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে। কর্মীদের অনুরোধ করেছি কাজে আসতে।’’

এখনও বিধাননগর পুরোপুরি ডেঙ্গির প্রকোপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। নারায়ণপুর, রাজারহাটের দিকে এখনও ডেঙ্গি হানা দিচ্ছে। দাপুটে ও বিতর্কিত এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘ঠিকাদারেরা সব সময়ে অস্থায়ী কর্মীদের টাকা আটকানোর চেষ্টা করেন। এখন তো সোনায় সোহাগা। বেতন বাকি অনেকেরই। আমরা নিজেরা ওই কর্মীদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি। যাতে কাজ বন্ধ না হয়।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি নিকাশি ও জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজে যুক্ত ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদেরও বেতন অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে। ওই আওতায় কাজ করা শ’পাঁচেক কর্মীর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই বলেই পুর নিগম সূত্রের খবর। ভাউচার সই করেই তাঁরা বেতন তোলেন। বেতন না পেয়ে জনা পঞ্চাশেক কর্মী কাজে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। পুর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় স্বাস্থ্য কিংবা নিকাশির কাজের জন্য সুশৃঙ্খল পরিকাঠামো কোনও দিনই ছিল না। সেখানে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়েই সব ধরনের কাজ করানো হত। তাঁদের বেশির ভাগেরই কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। ফলত নোট নিয়ে ডামাডোলের বাজারে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

বিধাননগরের পুর কমিশনার অলোকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘আমরা যে সব ব্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করি, তাদের অনুরোধ করেছি আরবিআই-এর কাছে অনুমতি নিতে। যাতে পুর নিগমের কাজ চালানোর পর্যাপ্ত টাকা আমরা হাতে পাই।’’

পুর নিগমের নিকাশি ও জঞ্জাল সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানার কথায়, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের আটকে যাওয়ার সমস্যা এখনও বড় আকার নেয়নি। পরিষেবা যথাসাধ্য দেওয়া হচ্ছে। তবে এটা ঠিকই যে, পরিষেবা দিতে গেলে যে যে খাতে নগদ টাকার প্রয়োজন, সেখানে পর্যাপ্ত টাকা আসছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন