Death

ডাম্পারে পিষে মায়ের মৃত্যু, অল্পের জন্য রক্ষা শিশুকন্যার

সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বালিটিকুরি বকুলতলা এলাকায় রেল সেতুর নীচে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০৩:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

অন্যান্য দিনের মতোই সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে ফুচকা খেতে বেরিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। তাঁদের পিছনেই রাস্তার ডান দিক ঘেঁষে তীব্র গতিতে ছুটে আসছিল বালি বোঝাই একটি ডাম্পার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেটি বাইকে আচমকা ধাক্কা মারায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি চালক। মোটরবাইক সুদ্ধ ডাম্পারের নীচে ঢুকে যাওয়ার আগে শেষ মুহূর্তে শিশুকন্যাকে ডান দিকে ঠেলে ফেলে দেন মা। কিন্তু নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। ডাম্পারের চাকার নীচে পড়ে যান তিনি। চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বছর ত্রিশের ওই তরুণীর।

Advertisement

সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার বালিটিকুরি বকুলতলা এলাকায় রেল সেতুর নীচে। সঙ্কটজনক অবস্থায় ওই তরুণীর স্বামী মহম্মদ নিসার ও তাঁদের মেয়ে নিমাত পরভিনকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিকে, দুর্ঘটনার পরেই ডাম্পারের চালক পালিয়ে যাওয়ায় রাস্তাতেই পড়ে ছিল সুলতানা পরভিন (৩০) নামে ওই তরুণীর দেহ। অভিযোগ, দেহ উদ্ধার করতে এসে কয়েকশো বাসিন্দার রোষের মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। মারধর করা হয় এক পুলিশকর্মীকে। উত্তেজিত বাসিন্দারা পুলিশের গাড়ি ও ডাম্পারটি ভাঙচুর করেন বলেও অভিযোগ। দেড় ঘণ্টা অবরোধ করা হয় হাওড়া-আমতা রোড। শেষে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ নামার পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহে দু’-তিন দিন স্বামী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে সলপ থেকে দাশনগরের পথে বালিটিকুরি কোয়ার্টার্সের কাছে রাতে ফুচকা খেতে আসতেন সুলতানা। সোমবার রাতেও তাঁরা সেখানে যাচ্ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় রাতে লরি, ট্রাক বা ডাম্পারের চালকেরা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোয় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সব জেনেও পুলিশ কিছু করে না। ওই রাতেও একই কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এক বাসিন্দা শেখ রাজু বলেন, ‘‘রাত ৯টা থেকে ‘নো এন্ট্রি’ উঠে যাওয়ার সময় হলেও তার আগেই পুলিশকে টাকা দিয়ে ট্রাক, লরি ঢুকে পড়ে। ফলে গোটা রাস্তা যানজটে আটকে তো যায়ই, ঘটে দুর্ঘটনাও।’’

Advertisement

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডাম্পারটি পিছন থেকে আচমকা বাইকে ধাক্কা মারে। চালক মহম্মদ নিসার রাস্তার ডান দিকে ছিটকে পড়েন। মেয়েকে বাঁচাতে তাকে ডান দিকে ঠেলে ফেলে দেন সুলতানা। কিন্তু তিনি নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। তবে নিসার এবং সুলতানার মাথায় হেলমেট ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নো এন্ট্রি উঠে যাওয়ার আগে লরি ঢুকতে দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তবে ফাঁকা রাস্তায় অনেক সময়ে বেপরোয়া ভাবে লরি বা ট্রাক চলে। আমরা তার জন্য মামলাও রুজু করি। এই ঘটনায় ডাম্পারটি আটক করা হয়েছে। চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন