নাতনি ‘চুরি’! জামাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশে দাদু-দিদিমা

এক জনের বয়স সাত। আর এক জনের তিন। জন্মের পর থেকেই দুই বোন বেশির ভাগ সময়ে দাদু-দিদিমার কাছে থাকত। আচমকা মায়ের মৃত্যুর পরে বাবা আবার বিয়ে করায় আদালতের দ্বারস্থ হন সেই দাদু-দিদিমা।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ১১:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক জনের বয়স সাত। আর এক জনের তিন। জন্মের পর থেকেই দুই বোন বেশির ভাগ সময়ে দাদু-দিদিমার কাছে থাকত। আচমকা মায়ের মৃত্যুর পরে বাবা আবার বিয়ে করায় আদালতের দ্বারস্থ হন সেই দাদু-দিদিমা।

Advertisement

তার পর থেকে দুই বোন পাকাপাকি ভাবে দাদু-দিদিমার কাছেই ছিল। বাবা প্রতি রবিবার দু’ঘণ্টার জন্য এসে দুই মেয়েকে দেখে যেতেন।

সেই সুযোগেই এক রবিবার মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে এসে ছোট মেয়েকে কোলে তুলে চম্পট দিলেন বাবা। এমনই অভিযোগ দাদু-দিদিমার। শুধু তা-ই নয়, ঠাকুমা-ঠাকুরদা, কাকু-কাকিমা-সহ সেই পরিবারের সকলেই গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। পুলিশের কাছে জামাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট নাতনিকে অপহরণের অভিযোগ করার পরেও নাতনির খোঁজ পাননি দাদু ও দিদিমা।

Advertisement

যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে বাবার পাল্টা দাবি, ‘‘বাবা থাকতে দাদু-দিদিমার কাছে কী করে নাতনিরা থাকতে পারে? এ রকম নির্দেশ আদালত দেয়নি। আমার বাচ্চাকে আমি এমনিই নিয়ে এসেছি। এটা অপহরণ হয় কী করে?’’

পুলিশ জানায়, বরাহনগরের বিধানপল্লির বাসিন্দা, ৬৮ বছরের বৃদ্ধ ১০ মে অভিযোগ করেন, তাঁর জামাই তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন দুই নাতনির সঙ্গে দেখা করতে। প্রতি রবিবারই তিনি আসেন। ৭ মে বিকেল পাঁচটায় জামাই আসেন ও ছোট মেয়েকে নিজের কাছে ডাকেন। অভিযোগ, বছর তিনেকের মেয়েটি বাবার কাছে যেতেই জামাই তাকে কোলে তুলে নিয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যান। ছোট নাতনিকে নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখে তাঁরাও পিছু ধাওয়া করে বাইরে বেরিয়ে দেখেন, সেখানে এক ব্যক্তি মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষা করছেন। জামাই সেই মোটরবাইকের পিছনে বসে দ্রুত বেরিয়ে যান।

ওই বৃদ্ধের কথায়, ‘‘২০১৫-র অক্টোবরে আমার মেয়ে ডেঙ্গিতে মারা যায়। তার আগে থেকেই দুই নাতনিকে বেশির ভাগ সময়ে আমাদের কাছে রাখত মেয়ে। ও মারা যাওয়ার পরেও দুই নাতনিকে জামাইয়ের কাছে ছাড়তাম না। জামাই আগে প্রায়ই মেয়ের উপরে অত্যাচার করত। মেয়ের মৃত্যুর পরে ২০১৬ সালে জামাই ফের বিয়ে করায় আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়ে দুই নাতনিকে নিজের কাছে রাখার অনুমতি পেয়েছি। কিন্তু তার মাঝে এই ঘটনায় আমরা খুবই চিন্তিত।’’

তিনি জানিয়েছেন, এর পর থেকে জামাইয়ের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। পাশের পাড়ায় তাঁর বাড়িতে ফোন করলে জানা যায়, তাঁরা সেখানে নেই। পরদিন, অর্থাৎ ৮ তারিখ রাত থেকে জামাই ও তাঁর পরিবারের বাকিরাও ওই বাড়ি থেকে কোথাও চলে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন বেজে গিয়েছে। এসএমএস-র কোনও উত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন