অনুভব দাস। নিজস্ব চিত্র
খবরের কাগজের নিরুদ্দেশ কলমে বিজ্ঞাপন বেরোনোর দিন সকালেই বাড়ি ফিরে এসেছিল ফটিকচাঁদ ওরফে বাবলু। সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি ও সন্দীপ রায়ের ছবিতে।
বাস্তবে নিখোঁজ হওয়ার সাত দিন পরে, শুক্রবার সংবাদপত্রের নিরুদ্দেশ কলমে বিজ্ঞাপন বেরোলেও বাড়ি ফিরল না নবম শ্রেণির ছাত্র অনুভব দাস। উল্টে যাদবপুরের অশ্বিনীনগরের বাসিন্দা ওই কিশোরের নিখোঁজ হওয়াকে ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। এতটাই যে, পুলিশ ও বাড়ির লোককে শনিবার ছুটতে হয়েছে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে, নদিয়া জেলার মাজদিয়ার কাছে ভীমপুর এলাকার চারা বটতলায়। ওই তল্লাটের কাছেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত।
যাদবপুর থানার পুলিশ ও বাড়ির লোকজন জানাচ্ছেন, ২৭ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ অনুভবের ছবি সংবাদপত্রের নিরুদ্দেশ কলমে দিয়ে বিজ্ঞাপন বেরোনোর পরেই শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অনুভবের বাবা অমলকুমার দাস একটি ফোন পান। ফোনে এক ব্যক্তি জানান, অনুভব তাঁর কাছেই আছে। তাকে দিয়ে গিয়েছেন এক মহিলা। ওই মহিলা বললে তবেই তিনি অনুভবকে তার বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেবেন।
তবে সেই মহিলাকে শুক্রবার দুপুর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তা নিয়েও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। ওই মহিলার বাড়ি নদিয়ার শিমুলিয়ায়। অনুভবের বাবাকে যিনি ফোন করেন, ওই মহিলা তাঁর ঘনিষ্ঠ। আবার পুলিশ জেনেছে, ওই মহিলার কিছুআত্মীয় অনুভবদের বাড়ির আশপাশে থাকেন।
ওই মহিলা বেপাত্তা হওয়ার পরে অবশ্য শনিবার সেই ব্যক্তি ফের ফোন করে অনুভবের বাবাকে জানান, পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এলে তবেই তিনি ছেলেটিকে তুলে দেবেন। সেই মতো শনিবার বিকেলে আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী নদিয়ার ওই তল্লাটে রওনা হয়েছে যাদবপুর থানার পুলিশ। সঙ্গে অনুভবের বাবা ও অন্য আত্মীয়েরা।
পুলিশ জানায়, স্কুলের একটি পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় অনুভব পরীক্ষার খাতায় কারসাজি করে নম্বর বাড়িয়ে বাড়িতে দেখিয়েছিল। কিন্তু ওই খাতা স্কুলে জমা দিতে গেলে সে ধরা পড়ে যায়। স্কুল থেকে ডাকা হয় বাড়ির লোকদের। সেটা ছিল ২৭ তারিখ। কিন্তু বাড়ির লোকজন স্কুলে যাননি। তাঁরা অনুভবকে বকাবকি করেন।
সে দিন অনুভব স্কুলে গেলেও ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যায়। বাড়ির লোকজন জানান, তার সঙ্গে হাজারখানেক টাকা ছিল।