Crime

গঙ্গায় মিলল দেহ, বৌবাজারের গেস্টহাউস মালিকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

ভূপালবাবুর পরিবারের সদস্যদের দাবি, গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় এক বন্ধুর ফোন পেয়ে তিনি বেরিয়ে যান মোটরবাইক নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ১৭:০১
Share:

নিহত ভূপাল মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

শিয়ালদহ এলাকার এক গেস্ট হাউস মালিকের দেহ উদ্ধারকে ঘিরে তৈরি হল রহস্য। রবিবার ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয় হাওড়ার রামকৃষ্ণ ঘাটের কাছে, হুগলি নদী থেকে। মৃতের পরিবারের দাবি, খুন করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে। সোমবার মুচিপাড়া থানায় অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ৩০ জুন বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা ভূপাল মুখোপাধ্যায়ের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর পরিবার। ৪৯ বছরের ভূপালবাবুর বৈঠকখানা রোডে একটি গেস্ট হাউস রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় কর্মী নিয়োগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

ভূপালবাবুর পরিবারের সদস্যদের দাবি, গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় এক বন্ধুর ফোন পেয়ে তিনি বেরিয়ে যান মোটরবাইক নিয়ে। রাতে ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা ফোন করলে সেই ফোন প্রথমে বেজে যায়। পরে সুইচড অফ দেখায়। ভূপালবাবু এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রাতে বাড়ি না ফিরে গেস্ট হাউসে থেকে যেতেন। সেই কারণে রাতে খোঁজ করেনি পরিবার। পরের দিন সকালেও বাড়ি না ফেরায় গেস্ট হাউসে খোঁজ করেন পরিবারের সদস্যরা। গেস্ট হাউজের ম্যানেজার জানান যে তিনি রাতে সেখানে ফেরেননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: হনুমানের লকেট-সহ দেহ তাইওয়ান উপকূলে, সম্বিতের কি?

পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা তখন ভূপালের সেই বন্ধুর বাড়ি যাই। কাছেই লাট্টুপাড়াতে সেই বন্ধুর বাড়ি।” অভিযোগ, ওই বন্ধু প্রথমে জানান, তাঁরা ওই রাতে নিমতলা ঘাটের কাছে ভূতনাথ মন্দিরের সামনে দেখা করেছিলেন। তারপর হঠাৎই বেপাত্তা হয়ে যান ভূপাল। তাঁকে না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন ওই বন্ধু।

বন্ধুর বয়ান বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না পরিবারের। অভিযোগ,পরিবারের সদস্যরা পাল্টা বন্ধুকে চাপ দিতেই তাঁর বক্তব্য আরও অসংলগ্ন হয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বন্ধুর কাছ থেকেই পাওয়া যায় ভূপালের মোবাইল। সেই বন্ধুই পরে পুলিশকে জানান কোথায় রয়েছে ভূপালের মোটর বাইক। পরে পুলিশ নিমতলা ঘাট এলাকা থেকেই সেই বাইক উদ্ধার করে। ভূপালের স্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘‘আ্মার স্বামীকে ওই বন্ধুই মদ খাইয়ে খুন করেছে বলে আমার সন্দেহ।” কিন্তু কেন বন্ধু খুন করবেন তা নিয়ে বিশদে কিছু জানায়নি ভূপালের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, শনিবার ওই বন্ধুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পরে ডিসি সেন্ট্রালের সঙ্গে পরিবারের লোকেরা দেখা করলে পুলিশ অভিযোগ নিতে রাজি হয়। রবিবার সেই অভিযোগ দায়ের করার পর দুপুরে রামকৃষ্ণ ঘাটে দেহ উদ্ধার হয়। রাতেই পরিবারের সদস্যরা সেই দেহ শনাক্ত করেন।

আরও পড়ুন: ৭ বছর আগেই মিলেছিল করোনার মতো ভাইরাস, গুরুত্ব দেয়নি উহানের ল্যাব

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দেহটিতে পচন ধরেছে। আপাত ভাবে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে ময়না তদন্ত না হলে মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব নয়। অভিযুক্ত বন্ধুকে জেরা করছে পুলিশ। তবে এখনও গোটা ঘটনা স্পষ্ট নয়। কারণ অনেকগুলো জায়গায় ধোঁয়াশা রয়েছে। মৃতের মোবাইল বন্ধুর কাছে রয়ে গেল কী করে, ভাবাচ্ছে পুলিশকে। মৃতের ফোন কল ডিটেলও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন