গাড়ি ছিনতাই করতেই কি খুন চালককে

শুক্রবার রাতে বর্ধমানের বেচারহাটে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে একটি হিমঘরের কাছে কুন্দনের রক্তাক্ত দেহ মেলে। তাঁর বাড়ি লিলুয়ার কুমারপাড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০২:০০
Share:

Symbolic picture

ঘটনার দু’দিন পরেও গাড়িচালক খুনের রহস্যভেদ হল না। আততায়ীদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ শুরু করেছে পুলিশ। তবে খুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা। নিহত কুন্দন মহারাজের (২৪) মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপে যে দু’টি ভোটার কার্ডের অস্পষ্ট ছবি পৌঁছেছিল, সেগুলি আততায়ীদেরই কি না, সে ব্যাপারেও ধন্দে তাঁরা।

Advertisement

শুক্রবার রাতে বর্ধমানের বেচারহাটে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে একটি হিমঘরের কাছে কুন্দনের রক্তাক্ত দেহ মেলে। তাঁর বাড়ি লিলুয়ার কুমারপাড়ায়।কুন্দনের বাবা সুরেন্দ্র মহারাজ জানান, ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার একটি হোটেলের সামনে থেকে কয়েক জন যাত্রীকে নিয়ে বর্ধমান রওনা হয়েছিলেন কুন্দন। রাতে যেখানে তাঁর দেহ মেলে, তারও প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ফাগুপুরের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া যায় গাড়িটি।

পুলিশ জানায়, গাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র মিলেছে। গাড়ির আসনে চাপ-চাপ রক্তের দাগও ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, গাড়িটি ছিনতাই করার মতলবে কুন্দনকে খুন করা হয়েছে। পালানোর সময়ে কোনও ভাবে দুর্ঘটনায় পড়লে আততায়ীরা গাড়ি ফেলে চম্পট দেয়। গাড়িতে হাতের ছাপ পরীক্ষায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

Advertisement

কুন্দনের পরিবার বর্ধমান পুলিশকে দু’টি ভোটার কার্ডের ছবি দিয়েছে। মৃতের বাবা এ দিন জানান, সম্ভবত দু’জন যাত্রী নিয়ে কুন্দন বর্ধমানে গিয়েছিলেন। তবে গন্তব্যে পৌঁছনোর পরেও আরও কিছুটা পথ নিয়ে যেতে বলায় যাত্রীদের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। ‘‘ছেলে আমায় ফোন করে। আমি বলি, যখন বলছে কিছুটা পৌঁছে দে। তবে যাঁদের নিয়ে গিয়েছিস, তাঁদের
পরিচয়পত্র চেয়ে ছবি তুলে ফোনে পাঠা। কুন্দন সেগুলি ফোনে পাঠিয়েছিল। তার পরে ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারিনি।’’, বললেন সুরেন্দ্রবাবু। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘মাঝরাস্তায় গাড়িতে আরও লোক উঠেছিল। তারাই আমার ছেলেকে মেরেছে। ও কখনও শহরের বাইরে যায় না। শুক্রবারেও না যেতে দিলে ভাল করতাম।’’

পুলিশ জানায়, তথ্য উদ্ধারের জন্য অস্পষ্ট ওই ছবিগুলি সিআইডি-র কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে সেগুলি যাত্রীদেরই কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা। রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘হাওড়ার যে হোটেলের সামনে থেকে ওই যাত্রীরা উঠেছিলেন, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। হোটেলের কাছে পেট্রোল পাম্পের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। কুন্দনের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’

তদন্তকারীরা জানান, রাস্তায় যে সব জায়গায় গাড়ি দাঁড়াতে পারে তারও সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে। ওই সব জায়গার সিসিটিভি ফুটেজও তাঁরা দেখতে চাইছেন। সেই মতো সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করা হয়েছে। কিছু ফুটেজ হাতে এলে তদন্তে দিশা পাওয়া যাবে বলে পুলিশের ধারণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন