মিছিলকারীদের লক্ষ্য ছিল লালবাজার। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রীতিমতো ‘আতঙ্কে’ রইল নবান্ন। এমনিতেই রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরকে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে রাখা হয়। বিজেপি সমর্থকেরা লালবাজারের বদলে হঠাৎ নবান্নে হাজির হতে পারেন, এই আশঙ্কায় সেই নিরাপত্তা এ দিন বহু গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
গত ২২ মে বামেদের নবান্ন অভিযান ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সে দিন মিছিল শুরু হওয়ার আগেই বাম বিধায়কদের একটি দল আচমকাই ঢুকে পড়েছিল রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতরে। বিরোধী বিধায়কেরা কোন পথে এসে সটান নবান্নে ঢুকে পড়ছিলেন, তা নিয়ে যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল পুলিশের কর্তাদের। প্রশাসনের উপরমহল থেকে বাম বিধায়কদের ঢুকে পড়া নিয়ে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে বলেও খবর।
প্রশাসনের একাংশের মতে, এ দিন সে কথা মাথায় রেখেই অতি সতর্ক ছিল পুলিশ। ব্যারিকেড-পিকেটের পাশাপাশি হাজিরছিল জলকামানও। এ দিন বেলা ১২টা থেকেই বিদ্যাসাগর সেতুর উপরে পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল। শুরু হয়েছিল গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ। সেতুর যে রাস্তাটি নবান্নের দিকে গিয়েছে, সেখানেও কড়া পাহারা ছিল।
বেলা সাড়ে ১২টা বাজতেই নবান্নের সামনে লোহার ব্যারিকেড বসিয়ে দেয় পুলিশ। নবান্নের প্রতিটি গেট, গলিতে পিকেট বসানো হয়। সেগুলিতেও পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ে। মন্দিরতলা, ব্যাতাইতলা-সহ হাওড়ার যে রাস্তাগুলি দিয়ে নবান্নের দিকে আসা যায়, সেগুলিতেও পথ আটকে গা়ড়ি ঢোকা বন্ধ করে
দেওয়া হয়।
পুলিশের একাংশের মতে, সোমবার বামেরা নবান্নের অন্দরে ঢোকার পর থেকে নানা ভাবে সতর্ক করা হয়েছে লালবাজার ও হাওড়া কমিশনারেটের কর্তাদের। এ দিন শুধু নিচুতলার কর্মী নয়, নিরাপত্তা নিয়ে অতি সতর্ক হতে দেখা গিয়েছে উচ্চপদস্থ অফিসারদেরও। নবান্নের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের সহকারী কমিশনার নিজে প্রতিটি বন্দোবস্ত খুঁটিয়ে দেখেছেন। দুপুরেই নবান্নে হাজির হন হাওড়া পুলিশের ডিসি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ) দেবাশিস বেজ। কোথায় কত পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছেন, কী ধরনের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, এমনকী, জলকামানের গা়ড়িচালক নিজের আসনে রয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে
দেখেন দেবাশিসবাবু।
তবে এ সব বন্দোবস্তই
সার, বিজেপির নেতা-সমর্থকদের কেউই এ দিন নবান্ন কেন, বিদ্যাসাগর সেতুর ধারেকাছেও যাননি।