পুরীর সমুদ্রসৈকত বরাবর বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল বা জাতীয় পরিবেশ আদালত বারবার নির্দেশ দিয়েছে। এ বার কলকাতায় ভিআইপি রোডের ধারে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে রিপোর্ট তলব করল তারা।
লেক টাউন এলাকায় ভিআইপি রোডের পাশে বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে একাধিক মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই সব মামলার শুনানিতে বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, ওই সব বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, দক্ষিণ দমদম পুরসভার কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে হবে আদালতে। পরবর্তী শুনানি ৩০ সেপ্টেম্বর। সে-দিনই পুরসভাকে ওই রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
আদালত সূত্রের খবর, ভিআইপি রোডের ধারে জলাভূমি বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে মামলা করেছিলেন দ্বৈপায়ন সেনগুপ্ত নামে এক ব্যক্তি। জলাভূমির ধার বরবার অবৈধ নির্মাণ নিয়ে মামলা করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও। তাদের আইনজীবী সোমনাথ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভিআইপি রোডের ধারে জলাভূমি বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণের ফলে পুরো এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’’
শুনানিতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী অর্পিতা চৌধুরী জানান, দূষণ নিয়ে তাঁরা বলতে পারেন। কিন্তু অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কিছু বলার এক্তিয়ার তাঁদের নেই। তার পরেই বিচারপতি দক্ষিণ দমদম পুরসভার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে তাঁরা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তার রিপোর্ট দিতে হবে।
মঙ্গলবারেই মহানগরীর যান-দূষণ সংক্রান্ত মামলায় কিছু নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। কলকাতায় গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা এখন ৬২। এই ধরনের আরও ১৬টি কেন্দ্র চালু হতে চলেছে। কিন্তু কোনও গাড়ি পরিবেশগত ছাড়পত্র পাম্পে দেখাতে না-পারলে তেল পাবে না, এমন ব্যবস্থা বলবৎ করার ক্ষেত্রে এই পরিকাঠামো যথেষ্ট কি না, এ বার রাজ্য সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছে আদালত। এই ব্যাপারে ৭ অক্টোবর রাজ্য সরকারকে তাদের মতামত জানিয়ে দিতে হবে।
যান-দূষণ নিয়ন্ত্রণে গাড়িকে তেল দেওয়ার আগে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেখার কথা ভাবা হয়েছে। একটি হিসেব থেকে জানা যাচ্ছে, কলকাতার রাস্তায় দিনে গড়ে ১৫ লক্ষ গাড়ি চলে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত গত অক্টোবরে যানবাহন থেকে কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে সেই মামলায় পক্ষ হিসেবে যুক্ত করেছে পরিবেশ আদালত। পাম্পে তেল পাওয়ার ক্ষেত্রে গাড়ির পরিবেশ সংক্রান্ত শংসাপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সমস্যা আছে কি না, আদালত সেটা ওই মন্ত্রকের কাছে জানতে চাইবে।