NCB

বাজেয়াপ্ত গাঁজার সঙ্গে ‘ফাউ’ তিন টন কাঁচা মাছ

অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে নিয়মিত কন্টেনারে করে বরফে মোড়া কাঁচা মাছ আসে এই রাজ্যে। সেটা মূলত কাতলা ও রুই।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০২:৩৫
Share:

এনসিবি-র দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে মাছভর্তি লরি। নিজস্ব চিত্র

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গাঁজা আটক করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সেই গাঁজার সঙ্গেই বাজেয়াপ্ত করা তিন টন কাঁচা মাছ নিয়ে এখন আতান্তরে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। নিউ টাউনের অফিস থেকে প্রায় তিন হাজার কেজি কাঁচা মাছ নিলামে বিক্রির জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি)।

Advertisement

অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে নিয়মিত কন্টেনারে করে বরফে মোড়া কাঁচা মাছ আসে এই রাজ্যে। সেটা মূলত কাতলা ও রুই। সাম্প্রতিক ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবারের। ওড়িশা থেকে গাঁজা পাচার হচ্ছে জানতে পেরে ডানলপ সেতুর কাছে ওত পেতেছিলেন এনসিবি-র অফিসারেরা। পশ্চিমবঙ্গে রেজিস্ট্রেশনের সেই লরি আসতে দেখে আটকানো হয়। দেখা যায়, লরিতে মাছের কন্টেনারের ভিতরে লুকনো রয়েছে গাঁজা। ৪৩৫ কিলোগ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয় ওই লরি থেকে। গাঁজা পাচারের অভিযোগে লরির সঙ্গে থাকা একটি পিক-আপ ভ্যান থেকে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়।

ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাছের লরি ওড়িশায় থামিয়ে সেখানে গাঁজা তুলে দেওয়া হয়েছিল। মাছ ও গাঁজা নিয়ে লরিটি যাচ্ছিল বনগাঁ। লরির ভিতরে মাছ সংক্রান্ত যে কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট করে তার মালিকের নাম উল্লেখ নেই। গোয়েন্দাদের অনুমান, কোনও ভাবে গাঁজা ধরা পড়ে গেলে মাছের মালিককে নিয়ে টানাটানি হবে বুঝতে পেরেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফলে ওই মাছ কোথায়, কার কাছে আসছিল, তা নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। এমনকি ওই কাগজেই লেখা রয়েছে তিন টন মাছের কথা। কিন্তু আদতে কত মাছ রয়েছে, সে সম্পর্কেও গোয়েন্দারা নিশ্চিত নন। তাঁরা এখনও পর্যন্ত মাছ ওজন করে দেখেননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতারণার ফাঁদে সাংসদের গাড়িচালক থেকে পুলিশ

আরও পড়ুন: রাজ্যে সংক্রমণের হার বেড়ে ১৩.৩%, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৩০ হাজার

গত বৃহস্পতিবারের পর থেকে মাছ ভর্তি সেই লরি রয়ে গিয়েছে নিউ টাউনে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর অফিসে। কন্টেনারের ভিতরে বরফ ঠাসা মাছ। কিন্তু সেই বরফও ধীরে ধীরে গলতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই মাছের গন্ধে ম ম করছে চত্বর। উপরন্তু, এত মাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এনসিবি-র পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি আদালতে এই মাছ নিলাম করার অনুমতি চাওয়া হয়। শনিবার সেই অনুমতি পাওয়ার পরে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে মাছ বিক্রির কথা ঘোষণা করা হয়।

এনসিবি-র এক কর্তা বলেন, “স্থানীয় বাজারে যাঁরা মাছ বিক্রি করেন, আমরা তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। বলা হয়েছে মাছ কেনার কথা। কিন্তু তাঁরা সকলেই খুচরো বিক্রেতা। এত বিপুল পরিমাণ মাছ কেনা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই পাইকারি বিক্রেতাদের জানাতে কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।”

এনসিবি সূত্রের খবর, আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে নিলাম শুরু হওয়ার কথা। এই ধরনের মাছের ন্যূনতম দাম কত হওয়া উচিত, তা নির্ধারণের জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্যও চাওয়া হয়েছে। কর্তাদের আশঙ্কা, বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে ক্রেতা না-এলে এবং মাছ বিক্রি না-হলে তা পচে যাবে। সে ক্ষেত্রে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও পথ থাকবে না।

গত কয়েক বছরের মধ্যে এমন সমস্যার মুখে পূর্ব ভারতের এনসিবি দফতরকে পড়তে হয়নি বলেও কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন