কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিক থেকে র‌্যাম্প ধরে সোজা সাঁতরাগাছি

টিকিট কাউন্টার, ফুড-কোর্ট, ওয়েটিং রুম, পার্কিং-সহ এক লক্ষ বর্গমিটার জুড়ে ভবনটি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছিতে। বছর খানেক আগে শুরু সে কাজ অনেকটা এগিয়েছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১১
Share:

পর্যাপ্ত জায়গার অভাব। তাই প্রস্তাব মতো রেললাইনের উপরেই তৈরি হচ্ছে ইস্পাতের কাঠামোর উপরে পাঁচতলা স্টেশন ভবন।

Advertisement

টিকিট কাউন্টার, ফুড-কোর্ট, ওয়েটিং রুম, পার্কিং-সহ এক লক্ষ বর্গমিটার জুড়ে ভবনটি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছিতে। বছর খানেক আগে শুরু সে কাজ অনেকটা এগিয়েছে। স্টেশনের চার ও পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপরে লোহার কাঠামোও বসে গিয়েছে। আপাতত তিনটি তলের নির্মাণ কাজ হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, পরবর্তী ধাপে আরও দু’টি তল তৈরি করা হবে।

রেল সূত্রের খবর, হাওড়া স্টেশনে ট্রেন এবং যাত্রীদের চাপ কমাতে সাঁতরাগাছি ও শালিমারকে প্রান্তিক স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা কয়েক বছর আগে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনা এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন সাঁতরাগাছিতে দৈনিক কয়েক লক্ষ যাত্রীর চাপ সামলানোর মতো পরিকাঠামো কী ভাবে তৈরি হবে তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন কর্তারা। রীতিমতো ভাবনাচিন্তার পরে এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন পাঁচ ও ছ’নম্বর রেললাইনের উপরেই তল বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়।

Advertisement

মূল স্টেশন ভবনটি প্রায় ২২০ মিটার লম্বা এবং ৪৪ মিটার চওড়া। ওই ৪৪ মিটার পরিসরের মধ্যে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে মাত্র ১৮ মিটার জায়গা পাওয়া গিয়েছে। আরও ২৬ মিটার জায়গা বার করতে তাই রেললাইনের উপরের অংশ ব্যবহার করতে হচ্ছে। ওই অংশে ভবনের দৈর্ঘ্য ১৪০ মিটার। এ জন্য রেললাইনের ধার ঘেঁষে ২৫টি স্তম্ভ তৈরি হয়েছে।

আধুনিক: নীচ দিয়ে যাবে ট্রেন। উপরে হচ্ছে স্টেশন ভবন। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

রেল কর্তাদের দাবি, ট্রেন চলাচল খুব বেশি ব্যাহত না করেই ওই কাজ হচ্ছে। জরুরি কাজের সময়ে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন,“যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচলের উপরে দিনে যাতে প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত ট্র্যাফিক ব্লক নিয়ে ওই কাজ করা হয়।”
রেল সূত্রের খবর, পাঁচতলা স্টেশন ভবনের প্রথম তিনটি তলায় বিভিন্ন পরিষেবা ব্যবস্থা থাকবে। ট্রেন চলাচলের বিষয়গুলিও নিয়ন্ত্রিত হবে সেখান থেকেই।

নিয়মিত ট্রেন চলাচলের ফলে কি কাঠামোর ক্ষতি হতে পারে? প্রকল্পের এক প্রযুক্তিবিদ বলেন, “ট্রেন চলাচলের কথা মাথায় রেখেই প্রকল্পটি তৈরি হচ্ছে।” প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, মূল স্টেশন ভবনের দু’দিকে ১৫ মিটার উচ্চতায় দু’টি পার্কিং লট থাকবে। সেখানে কমবেশি ২০০টির মতো গাড়ি পার্ক করার ব্যবস্থা থাকবে। পার্কিং লটে এবং স্টেশনে পৌঁছনোর র‌্যাম্প থাকবে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে। বয়স্ক, অশক্ত ও দৃষ্টিহীন যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরের ধাঁচে টয়লেট ও যাতায়াতের পথ তৈরি করা হবে। দৃষ্টিহীনদের দিক নির্দেশের জন্য বিশেষ টাইলস থাকবে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের জন্য ১৭০ মিটার লম্বা এবং ১২ মিটার চওড়া দু’টি ফুট ওভারব্রিজ হবে। চার ও পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে যাতায়াতের জন্য সাবওয়ে হবে। জিনিস নিয়ে যাত্রীরা যাতে সহজে চলাফেরা করতে পারেন সে জন্য চলমান সিঁড়ির বদলে বিমানবন্দরের ধাঁচে ট্রাভেলেটর হবে।

রেলের এক কর্তা জানান, স্টেশন তৈরি করতে প্রায় ৩৯০ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এই বিপুল খরচের থেকে রেল যাতে অতিরিক্ত আয় করতে পারে, সে ব্যবস্থাও থাকছে নির্মীয়মাণ ভবনে। সে জন্য আরও দু’টি তল বাড়িয়ে বাণিজ্যিক স্বার্থে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন