নব মহাকরণ

বিপর্যয় কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা

আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধন্দ থাকলেও নব মহাকরণের জীবনযাত্রা দ্রুত সচল করে তুলতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে গেল। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত তলাগুলির ছাদ কতটা পোক্ত, বাড়িতে ঢুকে সরকারি কাজকর্ম করা কত দূর নিরাপদ, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। শনিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্য নিয়েছেন রাজ্যের পূর্ত বিভাগের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৭
Share:

অগ্নিকাণ্ডের পরে সাফাই। শনিবার, নব মহাকরণে। — নিজস্ব চিত্র।

আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধন্দ থাকলেও নব মহাকরণের জীবনযাত্রা দ্রুত সচল করে তুলতে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে গেল।

Advertisement

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত তলাগুলির ছাদ কতটা পোক্ত, বাড়িতে ঢুকে সরকারি কাজকর্ম করা কত দূর নিরাপদ, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। শনিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্য নিয়েছেন রাজ্যের পূর্ত বিভাগের কর্তারা। সরকারি সূত্রের খবর, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ খুঁটিয়ে দেখেন বিশেষজ্ঞেরা। যেখানে আগুন লেগেছিল, সেই আটতলা ছাড়া সাততলা নিয়েও মাথাব্যথা রয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের। তবে পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের অনুমান, তাতে নব মহাকরণের সাত ও আট তলার ছাদ খসে পড়ার কোনও আশঙ্কা আপাতত নেই।

স্থানীয় পুলিশ ও পূর্ত দফতরের কর্তাদের মধ্যে এ দিন নব মহাকরণ নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়। পয়লা বৈশাখের পরে আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বহুতলটিকে পুরনো অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব বলেই প্রশাসনের অভিমত। লালবাজার সূত্রের খবর, বহুতলটিতে পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরিমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ঘর, অ্যান্টি চেম্বার, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের একটি অফিস, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের অফিস ইত্যাদি কয়েকটি ঘর পুড়ে গিয়েছে। বেঁচে গিয়েছে বিদ্যুৎমন্ত্রীর ঘর। দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতমন্ত্রীর ঘরের এসি থেকে অনেক কার্বন বেরিয়েছে। সম্ভবত এসি থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’’ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা শুক্রবারই ঘটনাস্থলে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। প্রাথমিক ভাবে তাঁদেরও ধারণা, সুব্রতবাবুর ঘরের এসি থেকেই বিপদের সূত্রপাত। ফলে অন্তর্ঘাতের কোনও আশঙ্কা আছে কি না, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।

Advertisement

আগুন কী ভাবে লাগল, তা নিয়ে রহস্য থাকলেও সুব্রতবাবু এখনই অন্তর্ঘাতের তত্ত্বকে আমল দিতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগুন লেগেছিল, আমার নিজের ঘরে। মন্ত্রীর ঘরে কিন্তু বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নথি তেমন ছিল না। ফলে অন্তর্ঘাতের জোরালো আশঙ্কা নেই বলেই মনে হচ্ছে।’’ মন্ত্রীর ঘরে প্রধানত আসবাবপত্র ছিল। সে সব অবশ্য পুড়েছে। আর জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগটি বহুতলের সাততলায়। সেখানে কিন্তু আগুন ছড়ায়নি। লালবাজার অবশ্য কোনও সম্ভাবনাই পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে নারাজ। অগ্নিকাণ্ড নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।

আপাত ভাবে বহুতলটির আগুন নেভানোর পরিকাঠামো নিয়ে সমস্যা না থাকলেও আগুনের মোকাবিলায় তৎপরতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। বহুতলটির ঘাঁতঘোত দমকলকর্মীদের ভালভাবে জানা না থাকায় খানিকটা সময় লেগেছে। দমকল-কর্তারা অবশ্য বলছেন, সেটা খুব বড় সমস্যা নয়। দমকলকর্মীরা তৎপর ছিলেন বলেই আগুন খুব বেশি ছড়ায়নি। এমনকী, আটতলাতেই বিদ্যুৎমন্ত্রীর ঘর বেঁচে গিয়েছে। দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানের দাবি, ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। তাতে বহুতলটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কোনও দোষ প্রমাণ হলে অভিযোগ রুজু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন