উপনগরীর জন্য জমি বাছাই শুরু

পক্ষকাল আগে বিষয়টি নিয়ে মহাকরণে বৈঠক করেছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন ওই দুই দফতরের পদস্থ কর্তারাও। তার পরে বৈঠক হল নবান্নে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সরকারি অফিস, সংশোধনাগার, কলোনি সরিয়ে নতুন উপনগরী গড়ে উঠবে আলিপুরে। এর জন্য ১০০ একর জমি চিহ্নিত করছে সরকার। তবে ওই উপনগরী সরকার নিজে না গড়লেও রাজ্য প্রশাসন তার পরিকাঠামো করে দেবে। পরে সেই জমি সরকার নিলাম করবে। যে সংস্থা জমি কিনবে, উপনগরী গড়ে বিক্রি করার অধিকারী হবে তারাই। এই সিদ্ধান্ত সরকার আগেই নিয়েছে। এখন শুরু হয়েছে জমি বাছার কাজ। তার জন্য ওই এলাকার জেলা প্রশাসনের অফিস, ভবানী ভবন, সংশোধনাগার, বিজি প্রেস-সহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি পাঠিয়ে জমির পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে নবান্নে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়।

Advertisement

পক্ষকাল আগে বিষয়টি নিয়ে মহাকরণে বৈঠক করেছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন ওই দুই দফতরের পদস্থ কর্তারাও। তার পরে বৈঠক হল নবান্নে।

ঠিক হয়েছে, কলকাতা পুরসভা প্রস্তাবিত উপনগরীর পরিকাঠামো গড়ে দেবে। নিলাম করার ভারও থাকবে তাদের উপরে। কতটা জমি রয়েছে ওই চত্বরে, কতটা খালি— এ সব-সহ আরও কিছু তথ্য আপাতত জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিটি সংস্থাকে বর্তমান কাঠামোর নকশা পাঠাতে বলা হয়েছে। এলাকাটি ঘুরেও দেখবেন সরকারি কর্তারা।

Advertisement

জানা গিয়েছে, ১০০ একর জায়গা জুড়ে আলিপুর উপনগরী (সাব সিটি) উন্নয়ন প্রকল্প সরকার নিজে না করলেও সেটির পরিকাঠামো অর্থাৎ জল, রাস্তা, নিকাশির ব্যবস্থা করবে তারা। নবান্নের এক কর্তা জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসকের অফিসের একটা বড় অংশের জমিও বিক্রির তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ওই কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেল ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসকের অফিস বারুইপুরে স্থানান্তরিত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার জন্য জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে।

তবে, ১০০ একর জমি বেচার মতো কাজের দায়িত্ব পুরসভার উপরে আসায় আতঙ্কিত ভারপ্রাপ্ত কর্তারা। একাধিক কর্তার কথায়, প্রথম কাজ ওই জমি চিহ্নিত করা। এমনিতেই জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জটিলতার শেষ নেই। তার উপরে আলিপুরে কলোনি রয়েছে। সেখানের বাসিন্দাদের সরানো কঠিন। যদিও প্রকল্পে পুনর্বাসনের কথা বলা আছে। তবে যে কোনও উচ্ছেদে সমস্যা থেকেই যায় বলে আরও চিন্তিত পুর কর্তারা। দ্বিতীয়ত, নিলামের আগে ওই জমির ‘রিজার্ভ ভ্যালু’ নির্ধারণ করতে হবে। যদিও নিলামের জন্য ট্রানজ্যাকশন অ্যাডভাইসার নিয়োগ করা হবে, তবুও রিজার্ভ ভ্যালু কত হতে পারে তার দায়িত্ব পুর প্রশাসনের উপরে থেকেই যায়। এক পুর কর্তার অফিসারের কথায়, ‘‘১০০ একর মানে ৬০০০ কাঠা। ওই এলাকায় কাঠা প্রতি দাম কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তাই রিজার্ভ ভ্যালু নির্ধারণ ঠিক না হলে পরে প্রশ্ন উঠতে পারে।’’

যদিও নবান্নের বৈঠকে এই মুহূর্তে ওই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। আপাতত কোথায় কত জায়গা রয়েছে, তা জানতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। জবাব এলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এর মধ্যেই সরকারের তরফে দেখা হবে, কত লোক ওই এলাকার কলোনিতে বসবাস করছেন। সব কিছু দেখেই প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন