হিসেবের চেয়ে খরচ বেশি, রাশ টানতে কঠোর মেয়র

শহরের পরিবেশ রক্ষায় কেইআইআইপি-র কাজে খরচ বেশি হওয়া নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে পুর প্রশাসনের অন্দরে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) দেওয়া ঋণে শহরের নিকাশি এবং পানীয় জল সরবরাহের কাজ করে ওই সংস্থা।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

শহরের পরিবেশ রক্ষায় কেইআইআইপি-র কাজে খরচ বেশি হওয়া নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে পুর প্রশাসনের অন্দরে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) দেওয়া ঋণে শহরের নিকাশি এবং পানীয় জল সরবরাহের কাজ করে ওই সংস্থা। খরচের ব্যাপারে এত দিন ‘একতরফা’ সিদ্ধান্ত নিতেই অভ্যস্ত ছিলেন কর্তারা। সেই ‘অভ্যাসে’ ধাক্কা দিলেন বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি কেইআইআইপি-র কর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন থেকে তাঁদের কাজ করতে হবে সরকারের আর্থিক নিয়ম মেনে।

Advertisement

কেন এই নির্দেশ? পুরসভা সূত্রের খবর, এডিবি-র থেকে দফায় দফায় ঋণ নিয়েছে পুরসভা। সম্প্রতি মিলেছে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজ্য সরকারের টাকাও। সেই টাকার খরচ নিয়ে, অভিযোগ উঠেছে। পুর নথি অনুযায়ী, জল সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। একটি ঠিকাদার সংস্থা দরপত্র দেয়। এবং তাকেই কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই কাজে খরচ ধরা হয়েছিল ১৫ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু দেখা যায়, ওই সংস্থার দর প্রায় ১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বরাদ্দ ব্যয়ের থেকে প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি।

অভিযোগ, অতীতে এ ভাবেই কেইআইআইপি-র একাধিক কাজে নির্ধারিত দরের চেয়ে ১০, এমনকি ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দরেও বরাত দেওয়ার ঘটনা রয়েছে। সেই ‘অভ্যাসেই’ দাঁড়ি টানতে চান নবাগত মেয়র। পুরসভা সূত্রের খবর, সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ারের কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছিলেন ফিরহাদ। ওই ইঞ্জিনিয়ার জানান, এডিবি-র শর্ত মেনেই তা করা হয়েছে। সে কথা শুনেই বিরক্ত হন মেয়র। ওই ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়ে দেন, এডিবি-র ঋণের সঙ্গে ম্যাচিং গ্রান্ট দেয় রাজ্যও। তাই রাজ্যের নিয়ম মেনেই যা করার করতে হবে।

Advertisement

ফিরহাদ বলেন, ‘‘ওই ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার দায় রাজ্য সরকারের। তাই খরচের ব্যাপারেও সরকারের নিয়ম মানতে হবে। অত্যধিক খরচ যাতে না হয়, সে জন্য সতর্ক করা হয়েছে কেইআইআইপি কর্তৃপক্ষকে।’’ তিনি জানান, বেশি দর এলে তা গ্রহণ হবে কি না, সেটা ঠিক করার জন্য পাঠাতে হবে সরকারের কাছে।

পাশাপাশি কেইআইআইপি-র কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন ছিল পুর ভবনে। বিশেষত, নিকাশির কাজ বিজ্ঞানসম্মত ভাবে না হওয়ায় বহু জায়গায় জলের প্রবাহ আটকে গিয়েছে। পাম্পিং স্টেশনে জল পৌঁছচ্ছে না। ফিরহাদ সংস্থার অফিসারদের জানিয়ে দিয়েছেন, কাজ করতে হবে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে। কোথাও গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে জবাব দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন