একটি মামুলি মোবাইল, যার দাম ১২০০ টাকা। তার দখল পেতেই জল গড়াল আদালতে।
কলকাতার জেল থেকে জাল নোটের এক কারবারি ওই ফোনে কথা বলে চক্রের কাজ চালাচ্ছিল, এমনই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তবে তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্য কারা দফতরের কাছে ওই ফোনটি একাধিক বার চেয়েও মেলেনি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে এনআইএ।
এনআইএ-র দাবি, মামলায় অভিযুক্ত, মালদহের বৈষ্ণবনগরের নিষ্ফল মণ্ডল প্রেসিডেন্সি জেলে বসে ওই ফোনে দিব্যি জাল নোটের কারবার চালাচ্ছিল। তদন্তের স্বার্থে ফোনটি তাদের দরকার, সঙ্গে জেলের কিছু নথিও। এনআইএ-র বিশেষ কৌঁসুলি দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী জানান, ওই ফোন ও নথি চেয়ে সোমবার আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
২০১৫-র ২৬ মে মুর্শিদাবাদ থেকে ১০ লক্ষ টাকারও বেশি জাল নোট উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত নিষ্ফলের বয়স ৪২ বছর। তদন্তে বেরোয়, সেই বছরের ডিসেম্বরে ধরা পড়ার পর থেকে নিষ্ফল একটি মোবাইলে চক্রের কাজ চালাচ্ছে। কয়েক দিনেই এনআইএ জানতে পারে, তার সহযোগীরা জেলে এসে দেখা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ নিচ্ছে। তাকে মোটা টাকাও দিচ্ছে।
২০১৫-র ২২ ডিসেম্বর এনআইএ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে চিঠি দিয়ে সব জানায়। ওই মোবাইল, জেলে নিষ্ফলের সাক্ষাৎপ্রার্থীদের তালিকা ও টাকার রসিদ দিতে অনুরোধ করে। ২০১৬-র ২ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ জেলে মোবাইল ব্যবহারের বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন হেস্টিংস থানায়। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর এনআইএ-র আইজি অলোক মিত্তল ফের মোবাইল ও নথি চেয়ে চিঠি দেন রাজ্যের এডিজি (কারা)-কে। কিন্তু উত্তর মেলেনি।
নিষ্ফলের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়েছে গত বছর মার্চে। এনআইএ-র বক্তব্য, চার্জশিট দেওয়া হয়েছে মোজাম্মেল ও দিলওয়ার নামে দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধেও। তারা পলাতক। মোবাইলটি থেকে তাদের ধরার গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে।
তবে লালবাজার সূত্রে খবর, ফোনটি এখন হেস্টিংস থানার মালখানায়। প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে হেস্টিংস থানায় রুজু হওয়া মামলার সূত্রে। লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, ‘‘হেস্টিংস থানায় মামলা হওয়ার পরে এডিজি (কারা)-কে এনআইএ কেন চিঠি দিল? আদালতের নির্দেশ ছাড়া তাঁর ওই মোবাইল দেওয়ার ক্ষমতা নেই। অনেক আগেই আদালতে আবেদন করা উচিত ছিল।’’