বন্ধুকে গুলি করে সে-ই, দাবি প্রিন্সের

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় বজবজে প্রিন্সের মাসির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে খাটের তলায় লুকিয়ে ছিল অভিযুক্ত। ওই বাড়ি থেকে থেকে তাকে ধরে পুলিশ। রাতে প্রিন্সকে নিমতা থানার বদলে বেলঘরিয়া থানায় এনে রাখা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

আদালতের পথে ধৃত প্রিন্স সিংহ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

স্কুটার চালিয়ে প্রিন্স সিংহ ধাওয়া করেছিল দেবাঞ্জন দাসের গাড়ির পিছনে। লুকিং গ্লাসে তা দেখতে পেয়ে গাড়ির গতি কমিয়ে জানলার কাচ নামিয়ে দিয়েছিলেন ওই তরুণ। স্কুটার ও গাড়ি পাশাপাশি চলার মাঝেই কথা কাটাকাটি শুরু হয়েছিল দু’জনের মধ্যে। দমদমের দেবাঞ্জন খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত প্রিন্সকে জেরা করে এমনই তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত যুবক জেরায় আরও জানিয়েছে, বচসার মধ্যেই দু’জনের হাতাহাতি শুরু হয়। সে সময়ে বাঁ হাতে স্টিয়ারিং ধরে রেখেছিলেন দেবাঞ্জন। আর ডান হাত দিয়ে প্রিন্সকে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। ফাঁকা রাস্তায় এমন ভাবে চলার সময়ে ওই তরুণের গাড়ি বাঁ দিকের দেওয়ালে ঘষা লাগাতে শুরু করে। আচমকাই প্রিন্স কোমর থেকে ৭ এমএম পিস্তল বার করে দেবাঞ্জনের দিকে তাক করে। সেটিও ডান হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেন ওই তরুণ। প্রিন্স দাবি করেছে, তখন সে নিজেই গুলি চালায়। যদিও ঘটনাস্থলের আগে-পরে কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা সেখানে প্রিন্স ছাড়াও আরও কয়েক জনের উপস্থিতি চিহ্নিত করেছেন। তারা কারা, সে বিষয়ে খোঁজ চলছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় বজবজে প্রিন্সের মাসির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে খাটের তলায় লুকিয়ে ছিল অভিযুক্ত। ওই বাড়ি থেকে থেকে তাকে ধরে পুলিশ। রাতে প্রিন্সকে নিমতা থানার বদলে বেলঘরিয়া থানায় এনে রাখা হয়। সেখানে এনে জেরা করা হয় তার বন্ধু, ধৃত বিশাল মারুকেও। বিশালের স্কুটারই ঘটনার দিন ব্যবহার করেছিল প্রিন্স। এমনকি, সল্টলেকের রেস্তরাঁয় প্রিন্সের নির্দেশেই নজরদারি করার জন্য আগে থেকে পৌঁছে গিয়েছিল বিশাল। কিন্তু নবমীর রাতে দেবাঞ্জনের ওই রেস্তরাঁয় যাওয়ার খবর প্রিন্স কী ভাবে পেল, সেটা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি দেবাঞ্জনের বান্ধবীর থেকেই খবরটা পেয়েছিল প্রিন্স?

পুলিশকে দেবাঞ্জনের বাবা অরুণবাবু জানিয়েছেন, নবমীর দিন সকালে তিনি, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। দেবাঞ্জনকে বললেও তিনি যাননি। বরং দাবি করেছিলেন, বাবা ফিরে এলে তিনি গাড়ি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে বেরোবেন। সেই মতো রাত ৮টা নাগাদ অরুণবাবুর থেকে চাবি নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি।

Advertisement

ঘটনার পরে চিনার পার্কের বাবলাতলায় যে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিল প্রিন্স, সেই যুবকেরও খোঁজ চলছে। খোঁজা হচ্ছে খুনে ব্যবহৃত পিস্তলটি। ব্যারাকপুরের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা চলছে।’’ রবিবার প্রিন্সকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন