৪৮ ঘণ্টা পরেও জানা গেল না শিবাজী রায়ের ফেরারি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ। সাড়ে তিন কোটি টাকার বিলাসবহুল ওই সুপারকার ঠিক কী ভাবে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ল, সে সম্পর্কে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। গাড়িটির নিজস্ব কোনও ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, না কি উল্টো দিক থেকে হঠাৎ এসে পড়া কোনও বাধার কারণেই ডান দিকে ঘুরতে বাধ্য হয়েছিলেন শিবাজী, সেটাও স্পষ্ট নয়।
মঙ্গলবার গাড়ি থেকে সংগৃহীত নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের দাবি, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে প্রতি পদে পুলিশকে সমস্যায় ফেলছে সিসিটিভি ফুটেজের অভাব। কারণ, ডোমজুড়ের দুর্ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরাই নেই।
রবিবার সকালে ছেলে শ্রেয়াংশকে নিয়ে লং ড্রাইভে বেরিয়ে মৃত্যু হয় স্যানিটারি সামগ্রীর ব্যবসায়ী শিবাজীর। ফেরার সময়ে অন্য গাড়িতে ওঠায় বেঁচে যায় ছেলে। সেই সময়েই শিবাজীর গাড়িতে উঠেছিল তাঁর বন্ধু-কন্যা আসনা সুরানা। শিবাজীর মৃত্যু হলেও গুরুতর আহত আসনা এখন
একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আসনার অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। তবে তার অবস্থার আর নতুন করে অবনতি হয়নি। আসনার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে আসনা সুস্থ হচ্ছে। তবে এখনও ‘লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম’ প্রয়োজন হচ্ছে তার। আসনার কাকা অতুল সুরানা বলেন, ‘‘ওর পায়ের চোট গুরুতর। মাঝেমধ্যে ডাকলে সাড়া মিললেও এখনও ভেন্টিলেশনে রয়েছে। ওর মা কিছুই খাওয়া-দাওয়া করছেন না। মেয়েটা সুস্থ হয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরুক।’’
আসনার সঙ্গে পুলিশ এখনও কথা বলতে পারেনি। তবে সে দিন সকালে শিবাজী ছাড়া আরও যে ছ’জন গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ডোমজুড় থানায় ডেকে পাঠানো হয় অন্য গাড়ির চালক অতুল, প্রবীণ অগ্রবাল, শশাঙ্ক উপাধ্যায়, সুরেশ তুলানি, সন্দীপ চক্রবর্তী এবং শ্রেয়স সাহাকে। তাঁদের কাছে দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাওয়া হয়।
হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘এই দুর্ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া, ওই এলাকায় কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। তাই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাকি চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্ঘটনার কারণ জানার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও তাঁদের ডাকা হবে।’’ যদিও পুলিশের আর একটি সূত্র দাবি করেছে, ওই চালকেরা তাদের জানিয়েছেন, শিবাজীর গাড়ির সঙ্গে তাঁদের কারও দূরত্ব ছিল তিন কিলোমিটার, কারও পাঁচ কিলোমিটার। ফলে তাঁরা কিছুই দেখেননি।