Kalighat Temple

Kali Puja 2021: ভিড়ের চেনা দৃশ্য উধাও কালীঘাটে

কোভিড-বিধি মেনে চলার লক্ষণ নেই মন্দিরের পান্ডাদের মধ্যেও। তাঁদের অধিকাংশেরই মাস্ক নেমে এসেছে থুতনিতে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৬:২০
Share:

ফাঁকা: ঘড়িতে তখন বেলা ১১টা। কালীঘাট মন্দিরের চার নম্বর প্রবেশপথ। বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিনে। নিজস্ব চিত্র।

এ যেন এক অচেনা কালীঘাট!

Advertisement

পুজোর দিনে মন্দিরের সেই চেনা ভিড়ের ছবি উধাও। নেই কোভিড-বিধি মেনে চলার বালাইও। অন্য বারের মতো কালীপুজোর দিনে ভক্ত সমাগমের কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হয়েছিল মন্দিরের সব প্রবেশপথ। গার্ডরেল দিয়ে প্রতিটি প্রবেশপথ ঘিরে দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা লাইনের ব্যবস্থাও করেছিল পুলিশ। কিন্তু এ বার পুজোর দিনে কালীঘাট মন্দিরে দর্শনার্থীদের সেই ভিড়টাই চোখে পড়ল না দিনভর।

মন্দির কমিটির এক কর্তার কথায়, ‘‘ভোরের দিকে অল্প কিছু সময় বেশ ভিড় হয়েছিল।’’ কিন্তু তার পরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মন্দির চত্বরে দেখা গেল না দর্শনার্থীদের সেই লম্বা লাইন। ভিড় সামলাতে মন্দিরের প্রতিটি প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও এ দিন দেখা গেল, বেঞ্চিতে বসে আড্ডায় মশগুল তাঁরা। কেউ নিজের মোবাইল ঘাঁটছেন, কেউ আবার গল্পগুজব করেই সময় কাটাচ্ছেন।

Advertisement

মন্দির চত্বরও এ দিন আশ্চর্যজনক ভাবে প্রায় ফাঁকা। শুধুমাত্র একটু ঠেলাঠেলি, ভিড় গর্ভগৃহের সামনের বারান্দায়। তা সামলাতে তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের।

ভিড় তো নেই-ই, উধাও হয়েছে আর একটি জিনিসও। তা হল, মন্দিরের জীবাণুনাশের ব্যবস্থা। দু’নম্বর প্রবেশপথের সামনে জীবাণুনাশক টানেলটি এখনও অকেজো, কোনও রাসায়নিক ও জল ঝরে পড়ার ব্যবস্থা নেই। মূল মন্দিরের ভিতরে জীবাণুনাশের যন্ত্রগুলিও বিকল। এ নিয়ে কালী টেম্পল কমিটির এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমার কিছু বলার নেই। যা বলার আদালত বলবে।’’

কোভিড-বিধি মেনে চলার লক্ষণ নেই মন্দিরের পান্ডাদের মধ্যেও। তাঁদের অধিকাংশেরই মাস্ক নেমে এসেছে থুতনিতে। মন্দিরে আসা, হাতে গোনা দর্শনার্থীর
অধিকাংশের মুখেও মাস্ক নেই। যা দেখে সেখানে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘কবে এঁরা সচেতন হবেন, সেটা একটা গবেষণার বিষয় হতে পারে। এত সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। তার পরেও কী ভাবে মাস্কহীন থাকছেন মানুষ, সেটাই মাথায়
ঢুকছে না।’’

দর্শনার্থী না থাকায় এ দিন মন্দির চত্বরে একাধিক মালার দোকানেও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বিক্রিবাটার পরিমাণ। এক মালা ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘গত বছরও ১০৮টি জবার মালা দেড়শো টাকায় বিক্রি করেছি। এ বার দাম ৫০ টাকা বললেও ক্রেতা অন্য দোকানে চলে গিয়েছেন। সকালে এই অবস্থা দেখেই বুঝে গিয়েছি, কী হতে চলেছে। বেলার দিকে ৪০-৫০ টাকা, যা দাম পাচ্ছি তাতেইমালা বিক্রি করেছি।’’ পুজোর দিনে কার্যত মাছি তাড়িয়েছে কালীঘাটের অধিকাংশ পেঁড়ার দোকানও। অথচ মন্দিরে ভিড় উপচে পড়বে, এমনটা ভেবেই বেশি পরিমাণে পেঁড়া তৈরি করে রেখেছিলেন দোকানিরা। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দর্শনার্থী-শূন্য মন্দিরের ছবিটা বদলায়নি। দোকানিরা তাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন— ‘‘আগের কালীপুজোর সেই ভিড় আর ফিরবে বলে মনে হয় না।’’ কিন্তু দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনের এত হিড়িকের পরে আচমকা কালীপুজোয় ভিড় এত কম কেন? তার কোনও ব্যাখ্যা নেই কারও কাছেই। বদলে কালীপুজোয় লোকসানের কথা ভেবেই আক্ষেপ করছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন