একে অন্ধকার, সঙ্গে কুয়াশা— দুইয়ে মিলে চিন্তায় ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ের টহলদার পুলিশ।
দিনের সঙ্গে রাতের তাপমাত্রার এখন বিশাল ফারাক। রাত বাড়তেই বাড়ছে কুয়াশা। এ দিকে, নিমতা থেকে কল্যাণী ও দক্ষিণেশ্বর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত কল্যাণী ও বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে কিছু জায়গায় ভেপার ল্যাম্প জ্বললেও কুয়াশায় সে আলোও আবছা। ফলে প্রতিনিয়ত এই দুই এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা ঘটছে। সোমবার রাতেও ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরবাইক দুর্ঘটনার বলি ভজন রাজবংশী ও জখম সন্টু রায়। কুণ্ডুবাড়ির কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারের অনেক গাছ কাটা হয়। কিন্তু সম্প্রসারণ থমকে আছে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে এই রাস্তাটি জোড়ার কথা ছিল নিমতায়। জমি অধিগ্রহণ ও জরিপের কাজ হলেও রাস্তা হয়নি। প্রথমে যে আলো ও রিফ্লেক্টর লাগানো হয়েছিল সেগুলির কিছু চুরি আর নষ্ট হওয়ার পরে নতুন লাগানো হয়নি। তার উপরে দুই রাস্তার ধারে জলা ও ফাঁকা জায়গা থাকায় রাত বাড়লেই বাড়ে কুয়াশা। সঙ্গে বড় পণ্যবাহী গাড়ির আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যায় ছোট গাড়ি ও দু’চাকার আরোহীদের। এ ছাড়া, দুই পথেই মাত্রাতিরিক্ত বাঁক থাকায় অনেক সময়েই গতির নিয়ন্ত্রণ থাকে না চালকদের।
ট্র্যাফিক পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, প্রতি মাসে এই দুই সড়কে দুর্ঘটনার মাত্রা এতই বেশি যে ব্যারাকপুর ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধিকাংশ হাইওয়ে পেট্রলকে রাতের ডিউটি দেওয়া হয়। টহলদার পুলিশদের অল্প দূরত্বে রাখা হয়। জানা গিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে দু’টির দুর্ঘটনাপ্রবণ অংশগুলি নিয়ে সম্প্রতি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফেও সমীক্ষাও হয়েছে। রিপোর্ট জমা পড়েছে পুলিশ কমিশনারের কাছে।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই দুই রাস্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেছি। বিপজ্জনক বাঁকগুলিতে রিফ্লেক্টর এবং অন্ধকার ও কুয়াশাতেও রাস্তার ধার নজরে পড়ে তেমন আলোর ব্যবস্থা হচ্ছে। থাকছে সিসি ক্যামেরাও।’’ এ দিকে, ব্যারাকপুর ও বিধাননগর দুই কমিশনারেটই ট্র্যাফিক বিভাগের ফেসবুক পেজ খুলেছে। তাতে এই দুই রাস্তা নিয়ে বহু চালক অভিযোগও করেছেন। তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে যদি দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও কমানো যায়, সেটাই লক্ষ্য পুলিশের।