মেয়রের ঘরের সামনে তল্লাশি। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র
মেয়রের ঘরে ঢুকতে চান? ভুলেও কলম বা মোবাইল নিয়ে যাবেন না। বলা ভাল, ও দুটো জিনিস নিয়ে আপনি ঢুকতে পারবেনও না মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে। লুকিয়ে নেবেন, সে উপায়ও নেই। কারণ, মেটাল ডিটেক্টরের ছোঁয়া লাগানো হবে আপনার শরীরে।
হঠাৎ কলম বা মোবাইলে নিষেধাজ্ঞা কেন?
পুরসভার একাংশের চর্চার বিষয় এটাই। তা হলে কি নারদ-কাণ্ডের পর অতিরিক্ত সতর্কতার জন্যই এই সিদ্ধান্ত? অনেকে বলছেন, ‘স্টিং’-এর সম্ভাব্য প্রকরণ নিয়ে যাতে কেউ মেয়রের ঘরে ঢুকতেই না পারেন, সে জন্যই এই পাকা ব্যবস্থা। তবে এই ধারণাকে নস্যাৎ করতে চান পুর কর্তারা। তাঁদের কথায়, শোভনবাবু এখন তো শুধু শহরের মেয়র নন, রাজ্যের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী। তাই আগের মতো যে কেউ যখন তখন তাঁর ঘরে ঢুকে যাবেন, এটা তো হতে পারে না।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে পুরভবনের মূল প্রবেশদ্বারে ঢোকা-বেরনো নিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ বার ধাপে ধাপে তা বাড়ানো হচ্ছে। মেয়র যতক্ষণ অফিসে থাকবেন, তাঁর ঘরের সামনে মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে এক জন নিরাপত্তা অফিসার থাকবেন। মেয়র পারিষদ, কাউন্সিলর এবং পুরসভার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের পরীক্ষা করার আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পরিচিত সাংবাদিকদেরও ছাড় রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তবে অন্যদের ক্ষেত্রে মেটাল ডিটেক্টর পেরিয়ে যেতে হবে মেয়রের ঘরে।
তবে যাঁর নিরাপত্তার জন্য এত আয়োজন, সেই তিনি অর্থাৎ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য এ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। শুধু বললেন, ‘‘এ সব পুর প্রশাসকদের বিষয়। আমি কিছু জানি না।’’
মঙ্গলবার পুরভবনে দেখা গেল, মেয়রের মূল চেম্বারে ঢোকার মুখে তাঁর একান্ত সহায়কের টেবিলের সামনে নীল কাপড়ে ঢাকা একটা পাত্র। পাশেই প্রহরারত এক জন নিরাপত্তা অফিসার। অপরিচিত কেউ মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে এলে প্রথমে তাঁর নামধাম জেনে নেওয়া হচ্ছে। পরে মেয়রের অনুমতি পেলে ভিতরে তাঁকে ঢুকতে দেওয়ার আগে তাঁর কলম এবং মোবাইল টেবিলের উপরে রাখা পাত্রে রাখতে বলা হচ্ছে। এর পরেই তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে মেয়রের ঘরে।